গুলশানের মামলায় পাচক সাইফুলও আসামি

গুলশানের ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পুলিশ যে মামলা করেছে তাতে ওই ক্যাফের ‘শেফ’ সাইফুল ইসলাম চৌকিদারসহ ছয়জনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2016, 11:58 AM
Updated : 31 July 2016, 07:17 PM

বাকি পাঁচজন হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের (১৯), রোহান ইবনে ইমতিয়াজ (২০), নিবরাজ ইসলাম (২০), খায়রুল ইসলাম পায়েল (২২) ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল (২৬)।

এ মামলার এফআইআর হাতে পাওয়ার পর বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী তদন্ত করে ২৪ অগাস্টের মধ্যে পুলিশকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।

গুলশান থানার পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন মিয়া গত সোমবার মধ্যরাতে ওই মামলা করার কথা জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, এজাহার পাঁচ হামলাকারীর নাম উল্লেখ কর অজ্ঞাত পরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও পাঁচজনের নাম আসামির তালিকায় থাকার কথা বলেন।

আর বুধবার মামলার যে এফআইআর আদালতে তোলা হয়েছে, সেখানে দেখা যায় ছয়জনের নাম।

এজাহারে মীর সামেহ মোবাশ্বেরকে এক নম্বর আসামি এবং সাইফুল চৌকিদারকে ছয় নম্বর আসামি করা হয়েছে।

হামলার রাতেই আইএস দায় স্বীকার করেছে বলে খবর এলেও এবং আইএস হামলাকারী পাঁচজনের ছবি দিয়েছে বলে সাইট ইনটেলিজেন্স ইউনিট জানালেও এ মামলার বাদী গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস গুলশান হামলার জন্য দায়ী করেছেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও তাদের সমর্থনপুষ্ট অন্যান্য সংগঠনকে।

গত শুক্রবার কূটনীতিকপাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে হানা দেয় একদল তরুণ। হামলার খবর শুনে গিয়ে বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

 শনিবার সকালে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ক্যাফেটি নিয়ন্ত্রণে আনার পর জানানো হয়, হামলাকারীরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করেছে।

অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত এবং একজন জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েন বলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়।

হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজন চিহ্নিত জঙ্গি বলে আইজিপির বক্তব্যের পর পুলিশ শনিবার রাতে পাঁচটি লাশের ছবি সাংবাদিকদের পাঠায়।

পাঁচজনের ছবির মধ্যে একজনকে পরে হলি বেকারির শেফ সাইফুল হিসেবে শনাক্ত করেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় থাকা তার পরিবারের সদস্যরা।

নিহত পাঁচজনের ছবিতে দুজনকে খায়েরুজ্জামান ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল নামে শনাক্ত করে বগুড়ার পুলিশ।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানের সময় যারা ‘নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে’ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হয়তো ‘ভুলক্রমে’ একজন ‘জিম্মিও’ নিহত হয়েছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি (সাইফুল চৌকিদার) ‘হয়তো জড়িত ছিলেন না’।

প্রাথমিক তথ্য সংশোধন করে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “ছয়টি লাশ সন্ত্রাসীদের বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হলেও পরে এদের পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তাদের অভিভাবকগণ তাদের শনাক্ত করেছেন। তারা জঙ্গি বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

এরপরও সাইফুলকে কেন আসামি করা হচ্ছে,তাকেও জঙ্গি হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না- তা জানতে মামলার বাদি রিপনের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ব্যস্ত আছি। পরে যোগাযোগ করেন।”

আর ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের শুধু বলেন, “সাইফুল ইসলামকে জঙ্গিদের গ্রুপের সঙ্গে দেখা গেছে।”