হাসানাত, তাহমিদের সঙ্গে সন্দেহের তালিকায় ‘কয়েকজন’

গুলশানের ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সন্দেহের তালিকায় আরও বেশ কিছু নাম যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2016, 09:45 AM
Updated : 6 July 2016, 05:33 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সন্দেহের তালিকায় থাকা উদ্ধার হওয়া জিম্মি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসানাত রেজা করিম ও তাহমিদ হাসিব খান তাদের হেফাজতেই আছেন। তদন্তের স্বার্থে সন্দেহভাজন অন্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “গুলশানের ট্রাজেডির ঘটনায় শুধু হাসানাত রেজা করিম এবং তাহমিদ নয়; আরও বেশ কয়েকজন সাসপেক্ট হিসেবে আমাদের তালিকায় আছেন। আমরা ইতোমধ্যে তাদের দুয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি, আরও কয়েকজনের বিষয় প্রক্রিয়াধীন আছে।”

শুক্রবার হলি আর্টিজান বেকারিতে ছয় বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মি সঙ্কটের অবসানের পর দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, ছয় হামলাকারী নিহত হয়েছেন, একজন ধরা পড়েছেন।

শনিবার সকালে উদ্ধার ১৩ জনসহ ২৭ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। পরে তাদের বক্তব্য শুনে যাচাই-বাছাই করে অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিযান শুরুর আগের এক ছবিতে ক্যাফের ছাদে দুই ব্যক্তির সঙ্গে হাসানাত রেজা করিমকে দেখা যায়।

অভিযান শুরুর আগের এক ভিডিওতে ক্যাফের দরজায় দেখা যায় হাসানাত রেজা করিমকে।

সোমবার গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই ১৩ জনের মধ্যে দুই জন পুলিশ হেফাজতে আছেন। তাদের একজন তাহমিদ (২২); আরেকজন হাসানাত কারিম।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “জঙ্গিদের মধ্যে ছয়জনই মারা গেছে। পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে, একজনের পাওয়া যায়নি।”

ব্যবসায়ী শাহরিয়ারের ছেলে তাহমিদ পুলিশকে বলেছেন, কানাডা থেকে দেশে ফিরে শুক্রবার ইফতারের পর বন্ধুদের সঙ্গে হলি আর্টিজান বেকারিতে গিয়েছিলেন। হাসানাত করিম বলেছেন, তিনি পরিবার নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন মেয়ের জন্মদিন উদযাপন করতে।

হাসানাত রেজা করিম। ফেইসবুক থেকে নেওয়া ছবি

পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কারণে হাসানাতকে অব্যাহতি দিয়েছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সাইট ইন্টেলিজেন্সে আসা হোলি বেকারির পাঁচ হামলাকারীর ছবির মধ্যে যাদের পরিচয় ফেইসবুকে আসছে, তাদের মধ্যে নিব্রাস ইসলামও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, যিনি কমান্ডো অভিযানে নিহত হন।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, ক্যাফেতে হামলার ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট।

জঙ্গি হামলায় হাসনাত করিম ও তাহমিদের সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পুলিশ পেয়েছে কি না- জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। আমরা শুধু এইটুকু বলতে পারি, এসব জঙ্গিদের মদদদাতা, অর্থদাতা, আশ্রয়দাতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। জঙ্গিদের পারিবারিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক অবস্থান সবকিছুই তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।”