গুলশান হামলায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা

গুলশানের ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার দুই দিন পর সন্ত্রাস দমন আইনে ‘অনেককে’ আসামি করে একটি মামলা করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2016, 06:14 PM
Updated : 4 July 2016, 07:30 PM

গুলশান থানার পরিদর্শক মো.সালাউদ্দিন মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ (সোমবার) মধ্যরাতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অনেকের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করা হয়েছে।”

গুলশানে বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত যে পাঁচ জঙ্গির নাম পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের আসামি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত শুক্রবার রাজধানীর কূটনীতিকপাড়া গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে হানা দেয় একদল তরুণ। হামলার খবর শুনে গিয়ে গুলি ও বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। 

এর ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ক্যাফেটি নিয়ন্ত্রণে আনার পর জানানো হয়, হামলাকারীরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে।

অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত এবং একজন জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক বলেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচ জঙ্গিকে তারা খুঁজছিলেন।

শনিবার রাতেই পুলিশ পাঁচটি লাশের ছবি দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ হামলাকারীর নামও জানায়। নামগুলো হল- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন।     

এদিকে বিশ্বজুড়ে ঝড় তোলা এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে আইএসের নামে আসা বার্তায় হামলাকারী হিসেবে তাদের সদস্য পাঁচজনের নাম বলা হয়-হচ্ছে-আবু উমায়ের, আবু সালমা, আবু রাহিক, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব।

পুলিশের দেওয়া ৫ লাশের ছবি

আইএসের তরফে আসা হামলাকারীদের ছবি

নামের এই অমিলের মধ্যে পুলিশ প্রধান বলেন, জঙ্গিরা সাধারণত ছদ্মনাম ব্যবহার করে থাকে।

এরপর পুলিশের দেওয়া ছবির পাঁচজনের মধ্যে একজন বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার মো. খায়েরুজ্জামান এবং আরেকজন একই জেলার ধুনট উপজেলার শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল বলে স্থানীয় পুলিশ জানায়।

আইএসের তরফে দেওয়া তালিকা ধরে অন্তত তিনজনের ফেইসবুকের ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করার কথা আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বগুড়ার দুজন মাদ্রাসা ছাত্র হলেও অন্য তিনজনের পড়াশোনা ঢাকার নামি ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তারা হলেন- রোহান বিন ইমতিয়াজ, নিব্রাস ইসলাম ও মীর সামেহ মুবাশ্বের।

তবে হামলাকারী হিসেবে পুলিশের ছবিতে থাকা একজন হলি আর্টিজান বেকারিরই পাচক সাইফুল ইসলাম বলে তার পরিবারের দাবি।

অভিযানের পর হলি আর্টিজান বেকারি

নিহত ছয়জনের মধ্যে অন্যজনের নাম কিংবা ছবি না প্রকাশের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি পুলিশ।

এদিকে নয় ইতালীয় ও সাত জাপনিসহ ২০ জনের নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের দুদিনব্যাপী শোক সোমবার শেষ হয়েছে।

গত দেড় বছরের জঙ্গি কায়দায় হত্যাকাণ্ডগুলোর মতো এই ঘটনায়ও দায় স্বীকার করে আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এলেও তা নাকচ করে পুলিশ প্রধান বলছেন, এই হামলাকারীরা বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির সদস্য।

হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে দুজনকে আটকের কথা সোমবার জানিয়েছেন আইজিপি শহীদুল হক, তবে তাদের নাম জানাননি তিনি। 

এই জঙ্গি হামলায় তদন্তে ইতোমধ্যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আগ্রহ দেখানো হয়েছে।