রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে শোক পালন করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী জঙ্গি, জিম্মি হন দেশি বিদেশি অন্তত ৩৩ জন।
প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্রবাহিনী। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২০ জনের লাশ পাওয়া যায় জবাই করা অবস্থায়।
নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতের নাগরিক। বাকি তিনজন বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে একজনের যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব ছিল।
এর আগে রাতে রেস্তোরাঁয় হামলার পরপরই সেখানে আটকেপড়াদের উদ্ধারে গিয়ে হামলাকারীদের বোমা-গুলিতে নিহত হন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দীন।
শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে গুলশানে নিহতদের স্মরণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রবি ও সোমবার শোক পালনের বিষয়ে আদেশ জারি করে।
এতে বলা হয়, “আর্টিজান বেকারিতে একদল সন্ত্রাসীর হাতে নৃশংসভাবে শাহাদাৎ বরণকারী দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত নিরীহ দেশি-বিদেশি ব্যক্তিদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ৩ ও ৪ জুলাই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক পালিত হবে।”
নিহত যারা
ইতালির নয়জন: নাদিয়া বেনেদিত্তো, ভিনসেনজো দ আলেস্ত্রো,ক্লদিও মারিয়া দান্তোনা, সিমোনা মন্টি, মারিয়া রিবোলি, আডেলে পুগলিসি, ক্লদিও চাপেলি, ক্রিস্টিয়ান রোসিস ও মারকো তোনডাট।
সাত জাপানি: তানাকা হিরোশি, ওগাসাওয়ারা, শাকাই ইউকু, কুরুসাকি নুবুহিরি, ওকামুরা মাকাতো, শিমুধুইরা রুই ও হাশিমাতো হিদেইকো।
একজন ভারতীয়: তারিশি জৈন।
তিন বাংলাদেশি: ইশরাত আখন্দ, অবিন্তা কবীর ও ফারাজ হোসেন।
বাংলাদেশে নজিরবিহীন এই জঙ্গি হামলার হতাহতের ঘটনায় ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও নানাভাবে আসছে শোকের প্রকাশ।
কেউ কেউ তাদের প্রোফাইলের ছবিতে কালো ব্যাজ রেখেছেন; কারও প্রোফাইল ছবির পুরোটাই ঢেকে গেছে শোকের কালোতে।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের পক্ষ থেকেও শোক প্রকাশ করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।