সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের দাবি

সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিয়ে বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন একটি সমাবেশের বক্তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2016, 06:11 PM
Updated : 30 June 2016, 06:19 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, “বাহাত্তরের সংবিধানকে অস্বীকার করা মানেই বাংলাদেশকে অস্বীকার করা।

“মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানকে বারবার কাঁটাছেড়া করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম সুসংগঠিত সংবিধান ক্রমান্বয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া তো দূরের কথা ক্রমান্বয়ে পিছনের দিকে হাঁটছি।”

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার সমালোচনা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “জিয়া ও এরশাদের সংশোধনীকে গ্রহণ করে তার বৈধতা দেওয়া হয়েছে, বাহাত্তরের সংবিধানের পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে- এ তো বিশ্বাসঘাতকতা।

“রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। ধর্ম ব্যক্তিগত ব্যাপার, প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে হলে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

জিয়াউর রহমান ও এরশাদের পথ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার সমাজতন্ত্রের পথ পরিহার করে ‘লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে’ বলে মন্তব্য করেন সিপিবি সভাপতি।

তিনি বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে ‘সেলফে আইনবন্দি’ করে রেখেছে।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

“নির্বাচনের নামে এখন প্রহসন হচ্ছে। ভোটের আগে নমিনেশন বাণিজ্যে এখন আর ভোট দেওয়ার দরকার পড়ে না। চেতনা ব্যবসার নামে ভেজাল শুরু হয়েছে চারিদিকে। দেশকে এখন ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তির দাবিদার আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধনের নামে ৭২-এর সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি সাম্প্রদায়িক ধারাগুলো অক্ষুণ্ন রেখেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট রায় থাকার পরেও বাহাত্তরের মূল সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। কোনো ইতিবাচক উদ্যোগও দেখি না তাদের।”

বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে সরকার ‘অনেক দূরে’ চলে এসেছে বলে মন্তব্য করেন জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া।

বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জিলানী শুভ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ী ক্ষমতাসীনরা শিক্ষা ব্যবস্থাপনার নামে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ করছে।”

‘উচ্চশিক্ষা গবেষণা আইন-২০১৪’ এর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।”

সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন সিং।