তিনি বলেছেন, “এটানিয়ে অপব্যাখ্যারকোনো দরকারনাই। কোনোসুযোগ নাই।বাদীকে তদন্তকারীজিজ্ঞাসা করবে,প্রাপ্ত তথ্যেরসত্যতা যাচাইকরবে... স্বাভাবিকএকটা প্রক্রিয়া।”
পুলিশ সুপার বাবুলআক্তারকে শুক্রবারগভীর রাতেঢাকার বনশ্রীতেতার শ্বশুরবাড়িথেকে ডেকেগোয়েন্দা পুলিশকার্যালয়ে নিয়ে তার স্ত্রী মাহমুদাআক্তার মিতুহত্যার ঘটনায়দীর্ঘ সময়জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শনিবার বিকালে তিনিবাসায় ফেরারআগ পর্যন্তপরিবার তারকোনো খবরনা পাওয়ায়এবং পুলিশকর্মকর্তারা তাদের ফোন না ধরায়নানা প্রশ্নেরউদয় হয়।
বাবুল গ্রেপ্তার হয়েছেনবলেও একপর্যায়ে গুজবছড়িয়ে পড়ে,যদিও পরেবাবুল নিজেটেলিফোনে তাঅস্বীকার করেন।
এমনকি মিতু হত্যারঘটনায় পুলিশবাবুলকেও সন্দেহকরছে বলেপ্রতিবেদন প্রকাশ করে কয়েকটি সংবাদপত্র,যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীআসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বা পুলিশকর্মকর্তাদের কারও কথায় তার সমর্থনমেলেনি।
রোববার দুপুরে রাজধানীরধোলাইপাড়ে এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নেরমুখে পড়েনঢাকা মহানগরপুলিশের (ডিএমপি)কমিশনার আছাদুজ্জামানমিয়া।
তিনি বলেন, বাবুলআক্তারকে তারাটেলিফোন করেবলেছিলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন,তিনি যেতেপারবেন কি-না। জবাবেবাবুল বলেছিলেন,গাড়ি পাঠালেইতিনি যাবেন।
“আমরা গাড়ি পাঠাইছি,উনি এসছেন।আমাদের ডিবিঅফিসে বসেসিএমপির তদন্তকারীদল তাকেজিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এখানে ডিএমপির কোনোবিষয় নয়।ডিএমপি কোনোজিজ্ঞাসাবাদ করেনি, ডিএমপি কাছেই যায়নি।”
বাবুল আক্তারের ‘সম্মতি’নিয়ে, গাড়িপাঠিয়ে তাকেনিয়ে আসারপর চট্টগ্রামেরতদন্তকারী দলই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেজানিয়ে ঢাকারকমিশনার বলেন,ডিবি অফিসব্যবহার করতেদেওয়া ছাড়াআর কোনোভূমিকা তাদেরছিল না।
“এখন তারা সকালবেলাকমফোর্টেবল, না বিকেলে কমফোর্টেবল, নারাতে কমফোর্টেবল-দ্যাটস অ্যানাদারথিং। সেটাউভয়পক্ষের সম্মতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
সুতরাং এর ভিন্নকোনো ব্যাখ্যারসুযোগ এক্ষেত্রেনেই বলেমন্তব্য করেনআছাদুজ্জামান মিয়া।
পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ও তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু
চট্টগ্রামের পুলিশ বলেআসছিল, গতদুই বছরেচট্টগ্রামে জঙ্গি দমন অভিযানে বাবুলেরভূমিকার কারণেজঙ্গিদেরই সন্দেহের তালিকায় প্রথমে রেখেছেনতারা; সেভাবেইমিতু হত্যারতদন্ত করছেনতারা।
ওই ঘটনায় বাবুলআক্তারের দায়েরকরা মামলায়দুইজনকে এরআগে গ্রেপ্তারদেখিয়ে রিমান্ডেনিয়ে পুলিশজিজ্ঞাসাবাদ করে।
নতুন করে আরওদুইজনকে গ্রেপ্তারকরার কথাজানিয়ে চট্টগ্রামমহানগর পুলিশেরকমিশনার ইকবালবাহার রোববারসাংবাদিকদের বলেন, ওই দুইজনের মধ্যেমোহাম্মদ ওয়াসিমমোটরসাইকেলে করে হামলায় অংশ নেয়এবং মিতুকেগুলি করে।আর আনোয়ারনামে অন্যজনহত্যাকাণ্ডের সময় এলাকা ‘রেকি’ করেছিল।
ছয় থেকে সাতজনওই ঘটনায়জড়িত ছিলজানিয়ে তিনিবলেন, “বাকিযারা, সবাইকেপেলে তদন্তকরে ঘটনারমোটিভ বলতেপারব। পূর্ণতদন্ত শেষহলে আমিপুরোপুরি বলতেপারব।”
ঘটনায় জড়িত সন্দেহেমোট ৮জনকে গ্রেপ্তারকরা হয়েছে-এমন সংবাদগণমাধ্যমে আসার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণকরলে তিনিবলেন, “অনেককেজিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেটাকে আমিআটক বাগ্রেপ্তার বলব না।”
মামলার বাদী বাবুলআক্তারকে বাসাথেকে নিয়েগিয়ে ‘জিজ্ঞাসাবাদের’বিষয়ে একপ্রশ্নে তিনিবলেন, “বাদীকেজিজ্ঞাসাবাদ আমি বলব না। তারসঙ্গে আলোচনাকরা হয়েছে।”
বাদিকে নজরদারিতে রাখাহয়েছে কিনা- এমনপ্রশ্নে পাল্টাপ্রশ্ন করেসিএমপি কমিশনারবলেন, “বাদীকেনজরদারি কেনকরা হবে?
“সেক্ষেত্রে তদন্তে যদিকোনো অভিযোগপ্রমাণিত হয়,সরাসরি ব্যবস্থানেওয়ার সুযোগআছে।”
স্ত্রী খুন হওয়ার পর স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার (সামনে মাঝে)।
শনিবার বাবুল আক্তারকেপুলিশ জিজ্ঞাসাবাদকরার সময়পরিবারের উদ্বেগেরমধ্যে কয়েকটিসংবাদ মাধ্যমএই কর্মকর্তাও তারপরিবারকে জড়িয়ে‘বিভ্রান্তিকর’ খবর প্রকাশ করায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেনমিতুর বাবামোশাররফ হোসেন।
রোববার ঢাকার বনশ্রীতেনিজের বাসায়তিনি সাংবাদিকদেরবলেন, “বিভিন্নমিডিয়া বলেন,ওয়েবসাইট বলেন,বিভিন্ন ভাবেএলোমেলোভাবে রিপোর্ট হচ্ছে, আসল জিনিসবাদ দিয়েঅন্য পথেযাচ্ছে, কেউফ্যামিলি রাইটেরওওপরে যাচ্ছে,ফ্যামিলি নিয়েভুল ব্যাখ্যাদিচ্ছে, এগুলোনিয়ে আমরাসন্দেহের মধ্যেআছি।”
এদিকে ডিবি কার্যালয়থেকে ফেরারপর শনিবারটেলিফোনে কথাবললেও কাওকেসাক্ষাৎ দিচ্ছেননা বাবুলআক্তার। তিনিবনশ্রীর ওইবাসাতেই আছেনবলে পরিবারেরভাষ্য।
তার শ্বশুর মোশাররফহোসেন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বাদীবলে বাবুলকারও সঙ্গেকথা বলতেচাইছে না।শনিবার বিকেলেবাসায় ফিরেরুমে যাবারপর আরসেভাবে বেরওহয়নি।”
বাবুল আক্তার সবকিছু মিলিয়ে‘মানসিকভাবে কিছুটা আপসেট’ বলে বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তার ভায়রাসাইদুর রহমান।