তনুর মায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন: আইএসপিআর

নিহত কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর পরিবারকে নজরবন্দি করে রাখা এবং তার বাবাকে গাড়িচাপা দেওয়ার যে অভিযোগ তার মা করেছেন, তা ভিত্তিহীন বলে নাকচ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2016, 11:44 AM
Updated : 23 June 2016, 11:45 AM

সম্প্রতি কুমিল্লায় এক সমাবেশে বক্তব্যে তনুর মা আনোয়ারা বেগমের অভিযোগ গণমাধ্যমে আসার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার এই প্রতিক্রিয়া আসে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে।

গত ২০ মার্চ  কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে তনুর লাশ উদ্ধার এবং তারপর তদন্তে অগ্রগতি না হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্নের মধ্যে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু তিন মাসেও কোনো খুনি শনাক্ত কিংবা ধরা না পড়ার মধ্যে গত সোমবার কুমিল্লা শহরে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশে আনোয়ারা বলেন, তাদেরকে সেনানিবাসে ‘নজরবন্দি’ করে রাখা হয়েছে। কথা বলতে বারণ করা হয়েছে তনুর বাবাকে।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেনকে সম্প্রতি গাড়ি চাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন আনোয়ারা।

ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেন পরিবার নিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরেই কোয়ার্টারে থাকেন। ওই কোয়ার্টার থেকে অন্য কোয়ার্টারে ছাত্র পড়াতে গিয়ে খুন হন ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও সংস্কৃতিকর্মী তনু।

এই সমাবেশেই নানা অভিযোগ করেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম

তনুর মায়ের অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন ও অসংলগ্ন’ দাবি করে আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজা-উল করিম শাম্মী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবার অবকাশ রয়ে যাচ্ছে।

ইয়ার হোসেনের পরিবার সেনানিবাসের অভ্যন্তরে অন্য সবার মতোই থাকছেন জানিয়ে বলা হয়, “তাদের স্বাধীন চলাচলে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়নি।

“হত্যাকাণ্ডের পর প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তা ও তদন্তের স্বার্থে তাদের বসবাস এলাকায় প্রহরী নিয়োগ করা হলেও পরবর্তীতে তা নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি সাপেক্ষে তুলে নেওয়া হয়েছে।”

সেনানিবাস নিরাপত্তার স্বার্থে সেনানিবাসের অভ্যন্তরে গমনাগমনের ক্ষেত্রে সবাইকে পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

“এই সামরিক রীতি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করা বা কারও ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য নয়।”

ইয়ার হোসেন অন্য কর্মচারীদের মতোই নিরাপত্তা পাচ্ছেন জানিয়ে বলা হয়, “তাকে বাস বা মোটর সাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ একটি ধারণাপ্রসূত ব্যাপার, যে ব্যাপারে তনুর পরিবার কাউকেই এ পর্যন্ত কোনো কিছু অবগত করেনি।

“এই ব্যাপারে ইয়ার হোসেনকে তার উপরস্থ কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও), যিনি বেসামরিক প্রশাসন হতে প্রেষণে নিয়োজিত একজন প্রথম শ্রেনীর সরকারি কর্মকর্তা, জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হন।”

তনু হত্যাকাণ্ডের আলোচিত এই ঘটনা তদন্তে সহযোগিতার পাশাপাশি তনুর পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে সেনাবাহিনী ‘বদ্ধপরিকর’ বলে আবারও আশ্বাস দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

“বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ তদন্তে পূর্ণাঙ্গ ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। সকল দেশবাসীর মতো দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও চায় প্রকৃত হত্যাকারীরা দ্রুত শনাক্ত হোক এবং তাদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে যথাযথ বিচারের সম্মুখীন করা হোক।”