উত্তরায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

রাজধানীর উত্তরার একটি খাল থেকে ৯৭টি পিস্তল ও এক হাজারের বেশি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2016, 12:59 PM
Updated : 18 June 2016, 09:53 PM

সেখানে কয়েকশ ম্যাগাজিন, শতাধিক গুলি তৈরির ছাচ ও বেয়নেটও পাওয়া গেছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার বিকালে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ী খালের পাড় থেকে এসব অস্ত্র, গুলি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে ৯৭টি পিস্তল, ৪৬২টি ম্যাগাজিন, এক হাজার ৬০টি গুলি ও ১০টি বেয়নেট রয়েছে। এছাড়া ১০৪টি গুলি তৈরির ছাচ পাওয়া গেছে।

এসব পিস্তলের মধ্যে ৯৫টিই বিদেশি জানিয়ে উপ-কমিশনার মাসুদ বলেন, এগুলো সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের।

যেসব ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে তার মধ্যে ২৬৩টি এসএমজির। আর গুলির মধ্যে ২২০টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোর পিস্তলের এবং ৮৪০টি নাইনএমএম পিস্তলের।

অস্ত্রগুলো সচল এবং এখনই ব্যবহার উপযোগী বলে জানান পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নুরুল আলম।

কীভাবে অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া গেল সে বিবরণে মাসুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি তুরাগ থানা থেকে দক্ষিণখান থানায় বদলি হওয়া এক কনস্টেবল দুপুরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ওই খালপাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন।

“সে সময় সন্তানকে প্রস্রাব করানোর জন্য পাশে নিয়ে গিয়ে নম্বরপ্লেটবিহীন একটি কালো পাজেরো গাড়ি এবং তার পাশে চার-পাঁচজন লোককে দেখেন। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তুরাগ থানায় ফোন করেন তিনি।”

পরে তুরাগ থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাতটি ট্রাভেল ব্যাগে এসব অস্ত্র ও গুলি পায়।

তুরাগ থানার ওসি মাহবুব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গাড়ি থেকে কোনো মৃতদেহ খালে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে ওই কনস্টেবল সন্দেহ করেছিলেন। এই সন্দেহ থেকে তিনি ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে তাকে ফোন করেন।

ফোন পেয়ে দ্রুতই সেখানে টহল পুলিশের একটি গাড়ি পাঠানো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ওই গাড়িটি সেখান থেকে চলে যায়।

পরে খাল পাড়ে অল্প পানি রয়েছে এমন জায়গায় অস্ত্র-গুলি ভর্তি ব্যাগগুলো পাওয়া যায়। খালের ভিতরে আরও অস্ত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিসকে ডাকা হয়।

পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা খালের ভিতরে তল্লাশি চালালেও আর কোনো অস্ত্র মেলেনি।

কে বা কারা এসব অস্ত্র গুলি সেখানে রেখেছে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি পুলিশ কর্মকর্তারা।

তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, “যারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জড়িত তারাই অস্ত্রগুলো রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

 রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানে ‘অস্ত্র নিজেদের কাছে রাখা নিরাপদ নয় ভেবে তারা নিরিবিলি স্থানে সেগুলো ফেলে রেখে যায়’।

“তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল তা তদন্ত করে দেখা হবে।”