শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের প্রতিবাদ

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তুলে নারায়নগঞ্জে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2016, 02:53 PM
Updated : 17 May 2016, 02:53 PM

এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিও এসেছে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।

এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ কলেরজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, “কোনো শিক্ষক অপরাধ করলে প্রচলিত আইনে তাকে বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু এ ধরনের আচরণ কখনোই কাম্য নয়। ঘটনার নায়করা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতয়ান আনার দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটি বলছে, “স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অনৈতিক আবদার, স্বার্থহানি ও দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে এবং পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করে। আমরা উক্ত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও স্থানীয় এমপিসহ দোষী ব্যাক্তিদের শাস্তির দাবি জানাই।”

গত ১৩ মে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে’ আঘাত দেওয়ার অভিযোগে শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করতে বাধ্য করেন স্থানীয় সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান। এ সময় জয় বাংলা স্লোগান দিতেও শোনা গেছে।

এ বিষয়ে পুলিশ কোনো ফৌজদারি অপরাধ না দেখলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এ ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তি পেতে হবে।

এক বিবৃতিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)পক্ষ থেকে বলা হয়, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যার্থ হয়েছে। একজন শিক্ষকের সাথে এ ধরনের অসম্মানজনক আচরণ ও নিন্দনীয় আচরণ কোনো সভ্য সমাজের কাম্য নয়।

“সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আমাদের জোর দাবি- এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে হবে এবং সুষ্টু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এর কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরি এক বিবৃতিতে বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে চলতে পারে না। বিভিন্নভাবে প্রভাবশালী হওয়া কিছু লোক ক্ষমতার দাপটে যা ইচ্ছা তা-ই করে বেড়াচ্ছেন। ধর্ম মানা বা না মানার বিচার করছেন, শাস্তি দিচ্ছেন। এভাবে একজন শিক্ষককে জনসম্মুখে অপমান করা ক্ষমতার দাপট প্রদর্শন ব্যতীত আর কিছু নয়।”