মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি এই দাবি জানায়।
সোমবার রাতে পানামা পেপার্স নিয়ে প্রকাশিত একটি তথ্যভাণ্ডারে অন্তত ১৮ বাংলাদেশির পাওয়া যায়, যারা বিদেশি ঠিকানা ব্যবহার করে শেল কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হয়েছেন।
দি ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্শিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিং জার্নালিস্টস (আইসআইজে) ফাঁস করা পানামা পেপার্স থেকে দুই লাখের বেশি অফশোর কোম্পানি, ট্রাস্ট ও ফাউন্ডেশনের ওই তথ্যভাণ্ডার প্রকাশ কর।
একই সঙ্গে মোস্যাক ফনসেকার মতো আরও দুটি ফার্মে নিবন্ধিত এক লাখের বেশি কোম্পানি, ট্রাস্ট ও ফাউন্ডেশনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০১৩ সালে ফাঁস করা এই ‘অফসোর লিকস’র তথ্যভাণ্ডারেও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাফর উল্যাহ ও নীলুফার জাফর উল্যাহসহ আরও কয়েক বাংলাদেশির নাম রয়েছে।
বিশ্বের মোট ২১টি কর অঞ্চলে নিবন্ধিত তিন লাখের বেশি অফশোর কোম্পানি, ট্রাস্ট ও ফাউন্ডেশনে যাদের নাম এসেছে, তারা আইন ভেঙে সম্পদ গড়েছেন- এমনটা বলছে না আইসিআইজে, তবে অর্থ পাচার করতে বা কর ফাঁকি দিতে আইনের ফাঁক ফোকর খুঁজেছেন অনেকেই।
এ প্রেক্ষিতে পানামা পেপার্সের নথিতে নাম থাকা বাংলাদেশিদের কতজন আইন ভেঙে সম্পদ গড়েছেন বা শেল কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হতে তাদের কেউ কর ফাঁকি দিয়েছেন কিনা সেটি দুদকসহ অভ্যন্তরীণ কোনো সংস্থার অনুসন্ধান বা তদন্তের পর বলা যাবে।
তবে টিআইবি বিবৃতিতে বলছে, “দেশের বাইরে নামে-বেনামে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা বা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ পাচারের মূল লক্ষ্য কর ফাঁকি। সরকারের অন্যতম দায়িত্ব এরূপ কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার বন্ধ করা।”
“প্রকাশিত তালিকায় যে বাংলাদেশিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনও না পাওয়া গেলেও সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে উদ্বেগজনক হারে টাকা পাচারের প্রবণতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা এবং এ ব্যাপারে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
অর্থ পাচার প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়াও আন্তর্জাতিক আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফেরতে পদক্ষেপ নিতেও বিবৃতিতে আহ্বান জানায় জার্মানভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
পানামার ল’ ফার্ম মোস্যাক ফনসেকার বিপুল সংখ্যক নথি গত মাসে ফাঁসের পর বিশ্বজুড়ে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। এতে অনেক রাষ্ট্রনেতারও অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ পাচারের চিত্র প্রকাশ পায়।
এরপর এসব নথিতে বাংলাদেশি কারও নাম রয়েছে কিনা তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে। ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্শিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) প্রকাশিত সোমবারের তথ্যভাণ্ডারে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশির নাম আসার পর তাদের বিষয়ে ওই অনুসন্ধান দল কাজ করছে বলে জানিয়েছে দুদক।