ভূমিকম্প আতঙ্ক: হুড়োহুড়িতে আহত

শক্তিশালী ভূমিকম্পে রাজধানীর উঁচু ভবনগুলো দুলতে থাকার মধ্যে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসার শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2016, 03:15 PM
Updated : 13 April 2016, 05:17 PM

বুধবার রাতে মিয়ানমারে সৃষ্ট এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দশমিক ৯ বলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২।

ভূকম্পনের সময় কয়েক মিনিট ধরে রাজধানীতে থেকে থেকে কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বড় বড় ভবনগুলো দুলতে থাকলে আতঙ্কে অনেকে নিচে নামতে থাকেন।

ওই সময় মগবাজারের নয়াটোলায় মাদ্রাসাতুল ইহসানের ছয়তলা ভবনের উপর তলায় থাকা শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হন বলে ওই এলাকার বাসিন্দা ‘হ্যালো’র শিক্ষানবিশ সহকারী সমন্বয়ক সুলতান ফাইজুল আহমেদ অরূপ জানিয়েছেন।

মাদ্রাসাটির শিক্ষক হাফেজ মোহাম্মদ নোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রদের পড়াচ্ছিলাম। হঠাৎ কম্পন শুরু হলে সবাই হুড়োহুড়ি করে নামতে থাকে।”

তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হলে তাদের মগবাজারের ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত সাতজনকে ওই হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাদরুল (৮) নামে একজন বুকে এবং তানিম (৯) নামে একজন পায়ে ব্যথা পেয়েছেন।

হাসপাতালটিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানউদ্দিন আজমী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেকেই (মাদ্রাসাছাত্র) এসেছিল, তিন-চারজনের অবস্থা গুরুতর।”

আতঙ্কে হুড়োহুড়িতে আহত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারেকুল ইসলাম তারেক (২৪) সূর্যসেন হলে থাকেন। তিনি স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তর হলের পড়ার কক্ষে ছিলেন তারেক। ভবনে ঝাঁকুনিতে ওই কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে হাতের কনুইয়ে তিনি ‘সামান্য’ আঘাত পান বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

তিনি আরও বলেন, এই শিক্ষার্থী ছাড়াও পুরান ঢাকার আগা মাসিহ লেইনের বাসা থেকে বের হবার সময় বৃষ্টি (১৮) নামের এক কিশোরী পায়ে আঘাত পান। এছাড়া নিমতলী থেকে পেশায় কসাই মো.শাহিন নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।

ভূমিকম্পে চট্টগ্রামের একটি বিপণি বিতানসহ কয়েকটি বহুতল ভবন হেলে পড়ার খবর দিয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের চট্টগ্রাম ব্যুরো। 

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদ জানান, ইপিজেড থানার কলসী দিঘী পাড় এলাকায় দেয়াল ধসে নুরুল হক নামে একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের ডা. টিপু সুলতান জানান, আহতাবস্থায় দুইজনকে চিকিৎসা কেন্দ্রে আনা হয়েছে।

তাদের মেধ্যে রায়হান ইসলাম নামে হিসাববিজ্ঞান বিভাগ তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। হলের দ্বিতীয় তলার ডাইনিং রুমে ভাত খাওয়ার সময় আতঙ্কে লাফ দেন রায়হান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা ছিল শক্তিশালী ভূমিকম্প। নিকট অতীতে আমাদের আশপাশে শুধু নেপালে এর চেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল।”