রবি-এয়ারটেল একীভূতে ‘মার্জার চার্জ’ নেওয়ার সুপারিশ

মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হতে একটি সুনির্দিষ্ট মাশুল নেওয়ার সুপারিশ করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2016, 01:46 PM
Updated : 7 April 2016, 01:46 PM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ  সকালে এ সংক্রান্ত একটি ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।”

এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি দুই অপারেটর একীভূত করার বিষয়ে কিছু শর্তজুড়ে চূড়ান্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠায়।

বিটিআরসির পাঠানো সেই প্রতিবেদন টেলিযোগাযোগ বিভাগ যাচাই-বাছাইয়ের পর ‘মার্জার চার্জ’ নেওয়ার সুপারিশ করে তা চূড়ান্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

একীভূত হতে সরকারকে কী পরিমাণ মাশুল দিতে হতে পারে- জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “ভারতে একীভূতকরণের কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, তারা মার্জার চার্জ নিয়েছে। এক্ষেত্রেও সেরকম হতে পারে।”

দুই অপারেটরের ব্যবসা একীভূত করতে ২৮ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর তা বিটিআরসিকে জানায়। এ নিয়ে শুনানি করে বিটিআরসি একীভূতকরণে কয়েকটি বিষয় সুপারিশ করে মূল্যায়ন পাঠায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে এয়ারটেল তার থ্রিজি লাইসেন্সের মেয়াদ অর্থাৎ ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের ২৫ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করতে পারবে না। এছাড়া একীভূত প্রতিষ্ঠান রবি এয়ারটেলের তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) ব্যবহার করতে পারবে। 

বর্তমানে রবির ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর যা হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ, যা অন্য সব অপারেটরের চেয়ে বেশি।

বিটিআরসি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দুই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মী যাতে চাকরিচ্যুত না হয়, তা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে বিটিআরসি। তবে যারা একীভূত প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে চাইবেন না, তাদের জন্য স্বেচ্ছা অবসরের সুযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

এদিকে রবি-এয়ারটেলের একীভূত হওয়া প্রতিযোগিতামূলক অবস্থা নষ্ট করবে দাবি করে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন এক ব্যক্তি।

বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই কোম্পানির একীভূতকরণের বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। আগামী ১১ এপ্রিল হাই কোর্টে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

দুই অপারেটরের ব্যবসা এক হওয়ার পর একীভূত কোম্পানি রবি নামেই চলবে। এক কোম্পানি হলে রবির গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে চার কোটির বেশি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন আছে সবার উপরে।

রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল; তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।