মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইনের খসড়া তৈরি করেছে আইন কমিশন।
Published : 22 Mar 2016, 05:46 PM
মঙ্গলবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে এই তথ্য জানান আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।
একাত্তরে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সম্প্রতি খালেদা জিয়া সন্দেহ প্রকাশের পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির শাস্তি দিতে আইন প্রণয়নের দাবি উঠে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তখন এই ধরনের একটি আইন প্রণয়নের কথা বললে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সুপারিশ পেলে সরকার তা আমলে নেবে।
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আইন কমিশনের প্রতিনিধি দলটি তাদের ২০১৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করতে মঙ্গলবার বঙ্গভবনে যান।
রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতিকে বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৫ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
আদালতের মামলা জট, কারণ ও সমাধানের উপায় এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের দায়বদ্ধতা, অসদাচরণ, অসামর্থ্য বিষয়ে তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম প্রসঙ্গে আইন কমিশনের মতামত ও সুপারিশ আবদুল হামিদকে জানানো হয়।
“ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধে আইনের খসড়াও সম্পন্ন করা হয়েছে,” বলেন রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এর তিন দিন পর আরেক আলোচনা সভায় দলটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ‘নির্বোধের’ মতো মারা গেছেন বলে মন্তব্য করলে ব্যাপক সমালোচনা ওঠে।
বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আসার পর বিভিন্ন মহল থেকে ‘হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্ট’র মতো বাংলাদেশেও আইন প্রণয়নের দাবি ওঠে।
এরপর বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের বিরুদ্ধে বক্তব্য বন্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারীদের পক্ষ যারা নেবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি আইনের খসড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা রাখার দাবিও তুলেছে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা, যাতে আইন প্রণয়নের আগের ঘটনার বিচারও করা যায়।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে আইন কমিশনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর ও এম শাহ আলম এবং সচিব মো. আলী আকবরও।
রাষ্ট্রপতি এ সময় আইন কমিশনকে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং বিদ্যমান আইনের হালনাগাদ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।