পরিবেশবাদীসহ বিভিন্ন পক্ষের উদ্বেগ মেনে নিয়েই সরকার সুন্দরবনসংলগ্ন বাগেরহাটের রামপালে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে এগোতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
Published : 22 Mar 2016, 04:04 PM
রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধীতার মধ্যে মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি সকল বিভাগের সাথে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সকল কনসার্নগুলোকে মেনে নিয়েই আমাদের আগামী দিনের ডেভেলপমেন্টগুলো করা উচিৎ। এ ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকার যথেষ্ট কনসার্ন বলে আমি মনে করি।”
‘মৈত্রী সুপার থারমাল’ নামের নির্মিতব্য ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ অংশ থেকে ৬৯ কিলোমিটার এবং সুন্দরবনের প্রান্ত সীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
পরিবেশবাদী ও কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের দাবি, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুন্দরবন। তারা প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আন্দোলনও করছে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুন্দরবনের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউনেস্কোর একটি প্রতিনিধি দল রামপালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, “… আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাই। আমরা সবার কনসার্ন মেনেই কাজগুলি করতে চাই।
“আজকে ইউনেস্কো (প্রতিনিধিরা) যাচ্ছেন, ২৮ তারিখে মন্ত্রণালয়ে বসবেন। সেখানে আমরা আমাদের প্রেজেন্টেশন দেব।”
মূলত ভারতের আগতলার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বুধবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘ত্রিপুরা-কুমিল্লা গ্রিড আন্তঃসংযোগ’ এর উদ্বোধন করবেন।
পালাটানার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে সড়কপথে পরিবহনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে ২০১৩ সালের অক্টোবরে ভেড়ামারা দিয়ে প্রথম আন্তঃদেশীয় গ্রিড স্থাপনের মাধ্যমে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়। বাংলাদেশে ভেড়ামারা-বহরমপুর গ্রিড লাইন দিয়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে।
এর বাইরে ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ত্রিপুরা থেকে আমদানি করা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য পড়বে সাড়ে ছয় টাকা।
আমদানি করা বিদ্যুতের দাম বেশি পড়ছে কি না জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, “ত্রিপুরায় যে দামে এ বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে তার চেয়েও কম দামে আমাদের দিচ্ছে।”