আস্থাহীনতার অবকাশ নেই: আইনমন্ত্রী

মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও দুই মন্ত্রীকে তলবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2016, 07:19 AM
Updated : 8 March 2016, 03:49 PM

মঙ্গলবার রায়ের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন এই বক্তব্য (দুই মন্ত্রীর) সরকারের নয়, সেহেতু আমি বলব আস্থাহীনতার কোনো অবকাশ এখানে নেই।”

আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ থাকবে যে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট একটা প্রতিষ্ঠান, ইট ইজ এন ইনস্টিটিউশন।

“সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ সেই ইনস্টিটিউশনের অংশ। যখন আদালতে কোনো ব্যাপার তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে আমরা সেটাকেই বলি সাব-জুডিস। এই সব সাব-জুডিস ম্যাটারে কারও কোনো বক্তব্য দেওয়াটা ঠিক না।

“এতে একটা প্রতিষ্ঠানের এবং এই প্রতিষ্ঠানের (সুপ্রিম কোর্ট) যদি কোনো সম্মান ক্ষুণ্ন হয় আমি মনে করি দেশের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়।”

মীর কাসেমের আপিলের রায় সামনে রেখে সরকারের দুইজন মন্ত্রী সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে পুনঃশুনানিরও দাবি তোলা হয়েছিল।

সকালে মীর কাসেমের রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এক আদেশে দুই মন্ত্রীকে তাদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলব করেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কি আমাকে আবার সাব-জুডিস ম্যাটারে প্রশ্ন করছেন না? আমি আপনাদের কাছে একটা উল্টা প্রশ্ন রাখি- এটা কি সাব-জুডিস হয়ে যাচ্ছে না এখন?

“সাব-জুডিস তো হয়ে যাচ্ছে। আপনারাই বলেন সাব-জুডিস কি না? এটা কোর্ট রুল ইস্যু করেছেন। তার মানে হচ্ছে যে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত একটা রুল ইস্যু করেছে এবং সেই রুলে এখন ব্যাপারটা আদালতের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং এখতিয়ারে।

“আমি আগে থেকেই যা বলে আসছি, এখনও তার পুনরাবৃত্তি করব- আমি কোনো সাব-জুডিস ম্যাটারে কখনই কথা বলিনি, এখনও কথা বলব না।”

রায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না দাবি করে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমরা একটা গণতান্ত্রিক সরকার। আমরা কখনোই বিচার বিভাগের কাজে কোনো হস্তক্ষেপ বা প্রেসার দেই না।”

আনিসুল হক বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য সম্পন্ন হয়, আর আমরা বারংবার সন্তুষ্ট হই। সেই একই ধারাবাহিকতায় আজকের রায়ে সরকার এবং আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের জনগণ সন্তুষ্ট।

“আমরা আশা করি যে, আইনি প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তির মাধ্যমে এই রায় আমরা কার্যকর করতে পারব ইনশাল্লাহ।”

রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, কাদের মোল্লার রিভিউ পিটিশনের রায়ে বলা হয়, রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আসামি রিভিউ পিটিশন করতে পারবেন।

“অপেক্ষা করব এই ১৫ দিনের জন্য। তারা যদি রিভিউ পিটিশন দাখিল না করে তাহলে আমরা এই রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

মীর কাসেম আলী রিভিউ আবেদন করলে তার শুনানি শেষে যে রায় হয় সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।