আমিতো ছাপোষা উকিল ছিলাম না: আইনমন্ত্রী

মীর কাসেম আলীর যুদ্ধাপরাধ মামলার আপিল পুনঃশুনানির যে দাবি খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম করেছেন, তা বিচারাধীন বিষয় নিয়ে হওয়ায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2016, 11:48 AM
Updated : 6 March 2016, 06:27 PM

তিনি বলেছেন, “আমিতো আর ছাপোষা উকিল ছিলাম না। ভাল ভাল গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো সব আমার হাত দিয়ে করা।

“আমি বারে থাকতেও বিচারাধীন বিষয়ে মুখ খুলতাম না। এখনও বিচারাধীন বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করি না।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেলের মর্যাদায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির দায়িত্ব পালন করা আনিসুল হককে ২০১৪ সালে সরকার গঠনের পর আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আর আওয়ামী লীগের ২০০৯-২০১৪ মেয়াদে আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে নতুন সরকারে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক আলোচনায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিলের পুনঃশুনানির ওই দাবি করেন কামরুল।

তিনি বলেন,আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে।

“এই মামলার রায় কী হবে, তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি, এই মামলায় আর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বলে গণমাধ্যমের খবর।

রায়ের দুদিন আগে দুই মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন বিতর্কিত মন্তব্য যুদ্ধাপরাধের বিচারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।  

এ বিষয়ে আনিসুল হকের প্রতিক্রিয়া জানতে রোববার সকালে এক আলোচনা সভার পর তাকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। কিন্তু বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন মন্ত্রী।

পরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটা আদালতে বিচারাধীন। আমি বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী যদি কোনো হ্যাঁ বা না বলি, কোনো মন্তব্য করি, তাহলে মামলার উপর প্রভাব পড়বে। সারা বিশ্বে এটা নিয়ে কথা বলবে, একটা আলোড়ন তৈরি হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, “ইট ক্যান হ্যাভ অ্যান ইমপ্যাক্ট অন দ্য কোর্ট। এ কারণে কোনো বিচারাধীন বিষয়ে কথা বলা যায় না।”

এই বারণের কথা কোন আইনে বলা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এটা জুডিশিয়াল কমপালশন। ইট ইজ নট অনলি অ্যা কনভেনশন অর ট্র্যাডিশন, ইট ইজ অলসো ইনকরপোরেটেড ইন মেনি জাজমেন্টস।

“যখন মামলা কোর্টের আওতায় চলে যাবে, ওয়ান মাস্ট বি সাইলেন্ট। বিকজ ওয়ান ওয়ার্ড মাইট ইনফ্লুয়েন্স দ্য ট্রায়াল। ”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল জামায়াতের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের। তাকে রক্ষার চেষ্টা চলছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে গণজাগরণ মঞ্চও আন্দোলনে রয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য আদালতকে প্রভাবিত করবে কি-না, এ প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, “সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করুন।”