বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুদকের উপ পরিচালক শামসুল আলম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
মামলার এজাহারে বলা হয়, একুশে টিভির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকাকালে বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সালাম।
তার বিরুদ্ধে একুশে টিভির বিজনেস প্রমোশন, বিনোদনসহ বিভিন্ন খাতে ভুয়া বিল দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে দুদক গত বছরের নভেম্বর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে।
প্রায় তিন মাস অনুসন্ধান শেষে মঙ্গলবার দুদক সালামের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দেয়; এরপর এই মামলা হল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সালামের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগও আছে।
“ওই অভিযোগ অনুযায়ী, বিদেশি প্রতিষ্ঠান ‘সিটিকপ’ এর নামে থাকা একুশে টিভির শেয়ার স্থানান্তরের অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার করেছেন তিনি। তবে বিষয়টি এখনও অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।”
একুশে টিভির সাবেক এই চেয়ারম্যান ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় দায়ের করা এক মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।
পরে ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায়ও তাকে আসামি করা হয়।
এদিকে এসব অভিযোগ মাথায় নিয়ে আব্দুস সালাম জেলে থাকার সময় গত বছরের ৮ অক্টোবর এক নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে একুশে টেলিভিশন লিমিটেডের শেয়ার এবং ট্রেডমার্ক, সার্ভিস মার্ক, লোগোসহ এতদসংক্রান্ত সব কিছু কিনে নেয় এস আলম গ্রুপ।
এরপর ২৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মণ্ডলীর এক সভায় পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আসে। বর্তমানে একুশে টিভির পরিচালনা পর্ষদে মোহাম্মদ সাইফুল আলম চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সামাদ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন।
২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল উন্মুক্ত টেরিস্ট্রিয়াল টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে সম্প্রচার শুরু করলেও ২০০২ সালের ২৯ অগাস্ট চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে আদালতের রায়ের পর একুশে টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর ২০০৫ সালের ১৪ এপ্রিল পুনরায় সম্প্রচারের অনুমতি নিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসেবে সম্প্রচারে আসে একুশে টিভি।