মোবাইল ফোনে মিউজিক কনটেন্টে অনুমতি লাগবে: তারানা

তৃতীয় কোনো পক্ষ নয়; গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠ শিল্পীদের সংগঠন বিএলসিপিএস'র অনুমতি নিয়েই মোবাইল ফোনে মিউজিক কনটেন্ট ব্যবহার করতে হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2016, 02:04 PM
Updated : 26 Jan 2016, 02:04 PM

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিনিধি, সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকারদের নিয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন গানের ক্ষেত্রে শিল্পী-সুরকার-গীতিকারদের সংগঠন বিএলসিপিএস (বাংলাদেশ লিরিসিস্টস কম্পোজার্স অ্যান্ড পারফরমার্স সোসাইটি) অথরিটি হিসেবে অনুমোদন দেবে। ২০১৭ সাল থেকে পুরোপুরি অথরিটি পাবে বিএলসিপিএস।

তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটররা দেখবেন বিএলসিপিএস এর অনুমোদন আছে কি না, এর কপি সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে কি না, কপিরাইটের রেজিস্ট্রেশন আছে কি না- এরপর সার্ভিসটি অনুমোদন দেবেন।

এসব পদ্ধতি অনুসরণ করলে মধ্যস্বত্বভোগীর সমস্যা সমাধান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তৃতীয় কোনো পক্ষ থাকবে না। 

অপারেটরদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য সব জায়গা থেকে কমাতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগীকে (কনটেন্ট পোভাইডার) বিলুপ্ত করে সে জায়গায় বিএলসিপিএসকে স্থলাভিষিক্ত করতে হবে।”

“অনুরোধ করব, স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে উর্দু গান প্রোমোট করবেন না। উর্দু গান, ভিন্ন ভাষাভাষির গান প্রোমোট করার আমাদের কোনো কারণ নেই, আমরা কেন প্রোমোট করব?

“বাংলা ভাষায় প্রচুর গান আছে। যে গানগুলো প্রশংসিত ও মানুষের কাছে পপুলার সেগুলো প্রোমোট করি।”

বিএলসিপিএস সভাপতি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, “আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরেই অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, টিভি চ্যানেল, এফএম রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে প্রচারিত কাজ থেকে শিল্পীরা রয়্যালটি পাচ্ছেন না।” 

সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট সবার রয়্যালটি আদায়ের লক্ষ্যে বিএলসিপিএস গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে শিল্পীদের গান ব্যবহারের অনুমোদন এবং রয়্যালটি প্রদানের জন্য এই সংস্থার কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।

“যেহেতু এই সংস্থা শিল্পীদের প্রাপ্য টাকা সংগ্রহ এবং বিতরণের দায়িত্ব নেবে, সেজন্য আমরা সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট সকলকে এই সংস্থায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ইতোমধ্যে বামবা ও এলসিএসগিল্ডসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ধারার সঙ্গীতকর্মীরা এ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বলেও জানান সাবিনা।

শিল্পীরা অভিযোগ করে আসছিলেন, তারা রয়্যালটি বঞ্চিত হচ্ছেন। এজন্য টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি ২০১১ সালে একটি আলাদা নীতিমালা করতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি।

বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৪ সালের ২৫ অগাস্ট দেশের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের কপিরাইটসহ অন্যান্য স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ লিরিসিস্টস, কম্পোজার্স অ্যান্ড পারফর্মারস সোসাইটি (বিএলসিপিএস) গঠন করা হয়। এর আগে সরকারের কপিরাইট অফিস থেকে নিবন্ধন নেওয়া হয়।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির, সুরকার আলাউদ্দিন আলী, শিল্পী এন্ড্রু কিশোর ও শাফিন আহমেদ।