জন্মদিনে মন্ত্রিসভায় শুভেচ্ছাসিক্ত মুহিত

জন্মদিনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন ৮৩ বছরে পা দেওয়া আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2016, 11:29 AM
Updated : 11 May 2017, 10:32 AM

প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের প্রাণশক্তির প্রশংসা করে একজন মন্ত্রী বয়স উল্টে মুহিতকে তুলনা করলেন ৩৮ বছরের তরুণের সঙ্গে।     

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে জন্ম নেওয়া মুহিত ‘একাধারে একজন অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা’।

টানা সাত বছর বাংলাদেশের বাজেট ঘোষণা করার রেকর্ডও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতের।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ অর্থমন্ত্রীর জন্মদিনের প্রসঙ্গ বৈঠকে তোলেন।

“এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও শুভেচ্ছা জানান অর্থমন্ত্রীকে।

“বয়সের অংক দুটো উল্টে দিয়ে একজন মন্ত্রী বলেন, তার যে অবস্থা তাতে বয়স ৮৩ না বলে ৩৮ বছর বলাই ভালো। অনেকেই তার এ কথায় সহাস্যে সায় দেন।”

বৈঠকে উপস্থিত একজন প্রতিমন্ত্রী জানান, শুভেচ্ছাসিক্ত অর্থমন্ত্রীর মুখে এ সময় ছিল স্মিত হাসি। তবে তিনি নিজে কোনো কথা বলেননি।

“একজন সিনিয়র মন্ত্রী রসিকতা করে অর্থমন্ত্রীকে বলেন, জন্মদিনের খাবার কই? এ সময় আরও কয়েকজন এই রসিকতায় যোগ দেন।”

সিলেট জেলা মুসলিম লীগের নেতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের দ্বিতীয় ছেলে মুহিত। তার মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরীও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করার পর অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডে উচ্চ শিক্ষা নেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার পর তখনকার পাকিস্তান এবং পরে স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো, মুহিত তখন ওয়াশিংটন দূতাবাসে কূটনৈতিক দায়িত্বে। জুন মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন তিনি।

১৯৭২ সালে পরিকল্পনা সচিবের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭৭ সালে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগে সচিবের হন মুহিত। ১৯৮১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে ‘অর্থনীতি ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে’ কাজ শুরু করেন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও আইএফএডি-তে।

১৯৮২-৮৩ সালে তখনকার এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্বে আসেন মুহিত।

দীর্ঘদিন বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করার পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন মুহিত। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি পান অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব মুহিতের কাঁধেই রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেওয়া জীবন বৃত্তান্ত বলছে, মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, জনপ্রশাসন এবং রাজনীতি নিয়ে ২৩টি বইও লিখেছেন মুহিত।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মন্ত্রীকে নিয়ে তার জন্মদিন পালন করেন।