রামপুরায় যানজট নিরসনে হচ্ছে ইউলুপ

রামপুরা ব্রিজ এলাকার যানজট নিরসনে হাতিরঝিল প্রকল্পের আওতায় মেরুল বাড্ডায় শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ইউলুপ নির্মাণের কাজ।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2016, 03:18 PM
Updated : 6 Jan 2016, 03:20 PM

বিটিভি ভবনের সামনে দুই বছর আগে শুরু হওয়া প্রথম ইউলুপটির নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ দিকে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ঢাকার দীর্ঘস্থায়ী যানজটপ্রবণ সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম রামপুরা ব্রিজের দুইপ্রান্ত। হাতিরঝিল প্রকল্প চালু হওয়ার পর সেখানে যানজট আরও বেড়েছে বলে ওই পথের যাত্রীদের অভিযোগ।

ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্তে স্টাফ কোয়ার্টার, বনশ্রী থেকে আসা যানবাহনগুলো বামে মোড় নিয়ে খিলগাঁও-মৌচাকের গন্তব্যে যায়। আবার পশ্চিম রামপুরা, মীরবাগ, হাজিপাড়া, মৌচাক ও খিলগাঁও থেকে আসা যানবাহনগুলোও ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে এসে বামে মোড় নিয়ে হাতিরঝিল, ডানে মোড় নিয়ে বনশ্রী প্রধান সড়ক এবং সোজা চলে মেরুল-বাড্ডা এলাকার গন্তব্যে যায়।

একইভাবে ব্রিজটির উত্তর প্রান্তেও হাতিরঝিল থেকে বের হওয়া গাড়িগুলো ডানে মোড় নিয়ে রামপুরার দিকে, বামে মোড় নিয়ে কুড়িল বিশ্বরোডের গন্তব্যে যায়।

এছাড়া এয়ারপোর্ট, উত্তরা, কুড়িল থেকে আসা যানবাহনগুলোকেও রামপুরা ব্রিজ হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হয়।  বিভিন্ন গন্তব্যের এই সম্মিলনস্থলটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকা এখন নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজউকের হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) জামাল আক্তার ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুটি ইউলুপ চালু করতে পারলে রামপুরা এলাকার যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে। অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এখন দুটি ইউলুপের নির্মাণ কাজই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।”

প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সেনা বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাউথ ইউলুপের (বিটিভি ভবনের সামনে) নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। ২৬ মার্চ এই সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।  

সেতুটি চালু হলে রামপুরা সড়কের যানজট কমে আসবে জানিয়ে রাজউক কর্মকর্তা জামাল বলেন, বনশ্রীর দিক থেকে বের হওয়া পরিবহনগুলো ডানে মোড় নিতে এই ইউলুপ ব্যবহার করবে। ফলে মূল সড়কে সিগনাল পড়বে না।

প্রায় দুই বছর প্রচেষ্টার পর মেরুল কাচাবাজার এলাকার ইউলুপটির নির্মাণ কাজ শুরু করা গেছে বলে জানান তিনি।

“বিভিন্ন দপ্তরে দেনদরবার করে সেখানে রাজউকের জমিতে থাকা দুটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন কিছু ভূমিও অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এসব কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা,” বলেন জামাল আক্তার।

ভূমি জটিলতার কারণে দক্ষিণের ইউলুপটি নির্মাণ শুরুর পরও প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আর কোনো বাধা নেই। প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ইউলুপ দুটি নির্মাণ হচ্ছে।

সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৪৩৭ মিটার দীর্ঘ ইউলুপটির (নর্থ ইউলুপ) নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন শ্রমিকরা। অধিকৃত সীমানার অভ্যন্তরে থাকা স্থাপনাগুলোকে সংশ্লিষ্ট মালিকদের উদ্যোগে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

মেজর শাকিল জানান, চলতি বছরের মধ্যেই ইউলুপটির নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন তারা। এবছর বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় সেতুটিও উদ্বোধন করা হবে বলেও আশা করেন তিনি।

২০০৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে ৩০২ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা হাতিরঝিল প্রকল্পে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হলেও এর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ এখনও চলছে।

প্রায় আট বছর ধরে চলা এই প্রকল্পটিতে রাস্তাঘাট ছাড়াও নগরবাসীর বিনোদনের জন্য এমপি থিয়েটার, লেজার শো, রেস্টুরেন্টসহ আরও কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।