বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি বলেন, "কতগুলো কারখানায় পলিথিন ব্যাগ তৈরি হচ্ছে কেউই সেই তথ্য দিতে পারছে না।বিনিয়োগ বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছেও এর সঠিক তথ্য নেই।"
ধান, চাল ও গমসহ ছয়টি পণ্যের সংরক্ষণ ও পরিবহনে পলিথিন বা প্লাস্টিক জাতীয় মোড়কের পরিবর্তে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই সভা হয়।
পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ অনুযায়ী, ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে আবশ্যিকভাবে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার করতে হবে।
এই ছয় পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
বাধ্যতামূলকভাবে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে গত ৩০ নভেম্বর থেকে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে সরকার।
এসব অভিযানে বুধবার পর্যন্ত সাত বিভাগে ৮৩৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
অভিযানে এই ছয় পণ্যের মোড়কে পাটজাত ব্যাগ ব্যবহার না করায় দুইজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলা হয়েছে এক হাজার ৮৮৫টি, আর জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭৬ লাখ ৩৬ হাজার ১০০ টাকা।
সভায় প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, "এক সময় অভিযান শিথিল হবে। পাটের মোড়ক বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদন বন্ধ করতে হবে।"
দেশে কী পরিমাণ প্লাস্টিকের কাঁচামাল আমদানি হচ্ছে, কী পরিমাণ প্লাস্টিক সামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে, দেশে কতগুলো প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে এবং দেশে প্লাস্টিকের চাহিদা কত- এসব নিরূপণে মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন মির্জা আজম।
তিনি বলেন, "এই কমিটি আগামী ৩০ ডিসেম্বর সার্বিক বিষয়ে সুপারিশ দেবে। প্লাস্টিকের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। কারণ পাটের ব্যাগের থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগের দাম তুলনামূলক কম।"
নির্ধারিত ছয়টি পণ্য প্যাকেজিংয়ে পাটজাত মোড়ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ৯০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপন্ন হতেই থাকে তবে এটা ধরে রাখা যাবে না।
বাধ্যতামূলকভাবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সরকারের নির্দেশনার পর দেশে পাটের ব্যবহার বেড়েছে দাবি করে মির্জা আজম বলেন, "বাধ্যতামূলকভাবে পাটজাত মোড়ক ব্যবহারের পণ্যের সংখ্যা ১৫টিতে উন্নীত করা হলে পাটের চাহিদা আরও বাড়বে।"