প্রাণভিক্ষা পাননি সাকা-মুজাহিদ

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মো. মুজাহিদ প্রাণভিক্ষা চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তা নাকচ করে দিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2015, 03:55 PM
Updated : 21 Nov 2015, 04:07 PM

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আনা সাবেক এই দুই মন্ত্রীর প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে আইন সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব এক ঘণ্টা বঙ্গভবনে ছিলেন।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি সাবেক এই দুই মন্ত্রীর আইনি লড়াই চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর তাদের শেষ সুযোগ ছিল দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া।

তাদের এই আবেদনও নাকচ হওয়ায় এখন দণ্ড কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

শেষ দেখা করতে সালাউদ্দিন কাদের এবং মুজাহিদের পরিবার ইতোমধ্যে কারাগারে পৌঁছেছেন।  

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে, যা প্রাণদণ্ড রাতেই কার্যকরের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এর আগে শনিবার সকাল থেকেই নাজিমউদ্দিন রোডে কারাগারের সামনে র‌্যাব-পুলিশের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকালে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

বিকেল ৪টার আগে শুধু র‌্যাব সদস্যদের সশস্ত্র পাহারায় দেখা গেলেও সন্ধ্যার আগে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদেরও সতর্ক অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।

গত বুধবার রিভিউ খারিজের পর তাদের দণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে শনিবার বেলা আড়াইটায় আইনমন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা আবেদন (ক্ষমার) করেছেন।”

এর আগে দুপুরে সালাউদ্দিন কাদের এবং মুজাহিদের পরিবার দুটি স্থানে আলাদা সংবাদ সম্মেলন করলেও প্রাণভিক্ষা চাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করেননি।

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন তারা।

সন্দেহ প্রকাশের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “কোনো অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। আমি বলতে চাচ্ছি, যে দরখাস্তটা করেছেন, সেটা বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা প্রয়োগ করার আবেদন করেছেন।”

সালাউদ্দিন কাদেরের পরিবার যুদ্ধাপরাধের ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বিচারে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তারা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিতে গিয়েছিলেন, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।

মুজাহিদের পরিবার বলেছে, ২১ অগাস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।

আইনমন্ত্রী বলেন, “বিচারিক আদালতে তাদের মামলা চলছিল, তখন এই সব কথা তারা সেখানে বলেছে। আদালত এইগুলো বিবেচনা করে, মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করে, বিচারিক আদালত তাদের দণ্ড দিয়েছে।

“সেই সাজার বিরুদ্ধে তারা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে। আপিল বিভাগে আপিল শুনানি অন্তে না-মঞ্জুর করে। সেখানেও তারা এই সব বক্তব্য দিয়েছিল। এরপর তারা রিভিউ করে, শুনানির পর তাদের সেই আবেদনও খারিজ হয়।”

“তিনটি আদালতে রায়ের পর আজকে তাদের যে দাবি এগুলো হচ্ছে, নেহায়েৎই পরিস্থিতি তৈরি করার দাবি। এর কোনো আইনি যৌক্তিকতা নেই।”