মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বাধা কাটল

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তুলতে হাই কোর্টের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2015, 07:38 AM
Updated : 16 Nov 2015, 07:38 AM

হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রী পরিষদে উপস্থাপনে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী আজহার উল্লাহ ভূইয়া।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আদালত বলেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৬৫ বা যে কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারে।”

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০০৬ সালের ১২ জুলাই এক স্মারকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর বাড়িয়ে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনা প্রতিপালন না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন শিকদার ২০১৩ সালে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।

এ বিষয়ে শুনানি করে আদালত রুল জারি করে। সরকারি স্মারকের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা কেন ৬৫ বছর করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। আরও ৬৮০ মুক্তিযোদ্ধা রিটে পক্ষভুক্ত হন।

রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি হাই কোর্ট রায় দেয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ওই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থাপন করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয় আদালত।

রিটে বিবাদী ছিলেন- আইন সচিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব।

পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ১৬ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলে।

এর ধারাবাহিকতায় ৩ নভেম্বর লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীপক্ষ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করে, যার নিষ্পত্তি হয় সোমবার।

আদালতে রিট আবেদনকারীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. রফিকুর রহমান, আবদুল বাসেত মজুমদার, ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, এম এম আমিন উদ্দিন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও আজহার উল্লাহ ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম।  

আদেশের পর আজহার উল্লাহ ভূইয়া বলেন, গত সরকারের মেয়াদে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। তখন সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর, যা পরে ৫৯ বছর করা হয়।

এ প্রেক্ষাপটে করা একটি রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা এক বছর বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর।