আল কায়দার নাম ভাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ: ডিবি

লেখক-প্রকাশক হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জড়িত থাকলেও আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2015, 08:20 AM
Updated : 7 Nov 2015, 09:50 AM

আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) নামে বিবৃতি পাঠিয়ে  আনসার আল ইসলামের টুইট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই দাবি করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।

জঙ্গি সন্দেহে চার পাকিস্তানি ও তিন বাংলাদেশিকে ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল।

গত সপ্তাহে দুই প্রকাশকের উপর হামলায় আনসার আল ইসলামের টুইটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তাদের দায় স্বীকার আংশিক সত্য।”

‘আংশিক সত্যের’ ব্যাখ্যায় মনিরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীপনকে হত্যা এবং টুটুলসহ তিনজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনার দায় যারা দায় স্বীকার করেছে, তারা তা বাংলাদেশে বসেই করেছে।

“দায় স্বীকারের সময় তারা ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা বলে যে দাবি করেছে, তা ঠিক নয়। পুলিশ তদন্ত করে এর কোনো সত্যতা পায়নি।”

প্রকাশক হত্যার পর আনসার আল ইসলামের টুইটে বলা হয়েছিল, “আমরা, আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা এই অপারেশনের দায় স্বীকার করছি।”

গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল তখন বলেছিলেন, “আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে যারা পরিচিত, তারা এই জাতীয় ঘটনা ঘটিয়ে এভাবে দায় স্বীকার করে। কখনও সেভেন (আনসার আল ইসলাম সেভেন), কখনও ফোর বা কখনও থ্রি নামে তারা দায় স্বীকার করে।”

“তারা যে নামেই দায় স্বীকার করুক না কেন, সবার অবস্থান এক ছাতার নিচে,” শনিবার বলেন তিনি।   

নিহত লেখক অভিজিৎ রায়ের দুই প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং আহমেদুর রশীদ টুটুলের উপর শনিবার হামলার পর ওই টুইটটি করা হয়।  

অভিজিতের পর ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায়কে কুপিয়ে হত্যার পরও একই ধরনের বার্তা এসেছিল।

ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পর আল কায়দার নামে আনসারুল্লার দায় স্বীকারের বার্তা এলেও সম্প্রতি দুই বিদেশি খুন, পুলিশ খুন এবং শিয়াদের মিছিলে হামলার পর দায় স্বীকারের বার্তা আসে আইএসের কাছ থেকে।

এর আগে পুলিশ আল কায়দা সম্পৃক্ত জঙ্গি, আইএস সম্পৃক্ত জঙ্গিদের ঢাকায় গ্রেপ্তারের খবর বেশ ফলাও করে দিলেও দুই বিদেশি খুনের পর অনেকটাই সংযত।

বাংলাদেশে আইএসের কোনো তৎপরতা নেই বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। তাদের বিবৃতি প্রকাশকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

জঙ্গি তৎপরতার জন্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। ২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যামামলায় এখন বিচারের মুখোমুখি তিনি।

গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অভিজিৎ হত্যার পর আনসারুল্লাহর নামে টুইটার থেকে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার বার্তা আসে প্রথম। তখন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছিলেন, আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে আনসারুল্লাহ।

গত ৩১ অক্টোবর বিকালে রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই সময়ে লালমাটিয়ায় আরেক প্রকাশক শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।