কলড্রপ সমস্যার মুখে পড়ে প্রতিকার না পাওয়ার কথাও জানিয়ে নিজের ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন তিনি।
বুধবার দুপুর ২টায় দেওয়া ‘ফিলিং এঙ্গরি’ দিয়ে শুরু এক স্ট্যাটাসে প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, “জিপির সমস্যাটা কী? কল করা অসম্ভব। কলড্রপ। কয়েক মাস আগে তবুও তারা কলড্রপের জন্য এসএমএস করে ক্ষমা চাইত, এখন তো তার কোনো বালাই নেই।”
“অরণীতে (প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার বাড়ি) খুব খারাপ নেটওয়ার্ক। আমার দুই তলার বেডরুম থেকে কালেভদ্রে সিগনাল পাওয়া যায়, যদিও সিগনাল দুর্বল করে দেবে এমন কোনো ভবনও আশেপাশে নেই। আমি দুই বছর আগে তাদের এ সমস্যাটা জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।”
শাহরিয়ার আলমের স্ট্যাটাসটিতে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও।
তিনি লিখেছেন, “আমি বারবার তাদের (গ্রামীণফোন) কলড্রপ সমস্যাসহ অন্যান্য সেবার মান বাড়াতে বলেছি। মনে হচ্ছে, সেবা দেওয়ার চেয়ে অর্থ উপার্জনের দিকেই তাদের ঝোঁক বেশি। তারা আমাদের মূল্যবান উন্নয়ন অংশীদার, এখন সময় হয়েছে সে অনুসারে কাজ করার।”
এই বিষয়ে গ্রামীণফোনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যটি তারা গোচরে নিয়েছে এবং তার সমস্যাটি যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
নেটওয়ার্কের যে কোনো সমস্যা গ্রামীণফোন গুরুত্বের সঙ্গে দেখে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
গ্রাহক সংখ্যা পাঁচ কোটিতে পৌঁছানোর মাইলফলক উদযাপন করার সময় গত অক্টোবরে নেটওয়ার্কের কারণে ভয়েস কলড্রপ হলে এক মিনিট ক্ষতিপূরণ দিয়ে একটি বিশেষ ‘অফার’ চালুর ঘোষণা দেয় গ্রামীণফোন।
অফারটি ফলাও করে প্রচার করলেও ‘গ্রাহকদের না জানিয়েই’ তা হঠাৎ বন্ধ করে দেয় বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরটি।
পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহকের অপারেটর গ্রামীণফোনের এই আচরণকে ভোক্তা অধিকার কর্মীরা ‘প্রতারণা’ হিসেবে দেখছেন। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগও রয়েছে গ্রাহকদের।
ক্ষতিপূরণ বন্ধের বিষয়টি গ্রাহকদের জানানো হয়েছিল বলে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও কবে কীভাবে তা করা হয়েছিল, সে তথ্য তারা দিতে পারেনি।
১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে গ্রামীণফোন দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে এবং দেশের ৯৯ শতাংশ জনপদ তারা নিজেদের সেবার আওতায় এনেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির দাবি।
বিটিআরসির জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১২ কোটি ৮৭ লাখ মোবাইল ফোন গ্রাহকের মধ্যে ৫ কোটি ৩৯ লাখ গ্রাহক গ্রামীণফোনের সেবা নিচ্ছেন। মুনাফাও তারা করছে বেশি।
মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে গ্রামীণফোনই শুধু পুঁজিবাজারে রয়েছে। তাদের ১০ শতাংশ শেয়ারই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বড় লগ্নি।
এ কোম্পানির ৫৫.৮ শতাংশ মালিকানা রয়েছে নরওয়ের কোম্পানি টেলিনরের হাতে। টেলিনরের আরও কয়েকটি দেশে ব্যবসা থাকলেও বাংলাদেশে গ্রামীণফোনের মাধ্যমে তাদের আয় ভারতীয় ইউনিনরসহ অন্যদের তুলনায় বেশি।