চার কিলোমিটার ইটের রাস্তা করছে গ্রামবাসী

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় একটি গ্রামের মানুষ নিজেরাই ইট বসানোর কাজ করছে চার কিলোমিটার রাস্তায়।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2015, 01:48 PM
Updated : 9 Oct 2015, 03:01 PM

শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে বড় পোদাউলিয়া গ্রামের মানুষজনকে কাজ করতে দেখা গেছে।

বাঁকড়া-বাগআঁচড়া পাকারাস্তা সংলগ্ন ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের আমতলা মোড় থেকে কাঁচারাস্তা ধরে চার কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে বড় পোদাউলিয়া গ্রাম। দুই গ্রামের মাঝখানে রয়েছে একটি বিল।

বড় পোদাউলিয়া গ্রামের মাতবর নূর ইসলাম মোড়ল (৬৫)বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বর্ষাকালে কাদার কারণে অন্য এলাকা থেকে প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পাঁচ হাজার মানুষের এই গ্রামটি।

“আমতলা মোড় থেকে বড় পোদাউলিয়া পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হলে গ্রামটি মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে।”

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জাহান আলি সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রামটিতে পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে আছে একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি দাখিল মাদ্রাসা, চারটি মসজিদ, দুটি হেফজখানা ও এতিমখানা।

সরকারি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই গ্রামবাসী হেফজখানা ও এতিমখানা পরিচালনা করে আসছেন বলে জানান জাহান আলি।

গ্রামের প্রবীণ মাতবর আব্দুল আজিজ (৭০) বলেন, “আমরা অনেক চিষ্টাবিষ্ট করিচি, কিন্তু সরকার সেদিকি কান দেয় নাই। তাই অহন নিজিরাই উদ্যোগ নিয়ে ইট বসাচ্ছি।”

এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যশোর এমএম কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী পোদাউলিয়া গ্রামের ছেলে নূর হোসেন।

তিনি বলেন, “স্থানীয় ইটভাটার মালিকরা আমাদের কাজে সহযোগিতা করছেন। তারা কম দামে ইট সরবরাহ করছেন। গ্রামের সব বয়সের নারী-পুরুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিক্তিতে ইট বসানোর কাজ করছেন। এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সব খরচ গ্রামবাসী বহন করছেন।”

এখন পর্যন্ত দুই কিলোমিটারে প্রথম স্তর ইট বিছানো হয়েছে জানিয়ে নূর হোসেন বলেন, কাজটি পর্যায়ক্রমে এগিয়ে নেওয়া হবে।

এই গ্রামের আড়াইশ প্রবাসী আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন বলে জানান নূর হোসেন।

স্থানীয় শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ধাবক বলেন, “রাস্তাটি কার্পেটিংয়ের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। নিয়মানুসারে কাজটি হতে সময় লাগবে। তবে বড় পোদাউলিয়া গ্রামের মানুষ যা করছে তা দেশে একটি রেকর্ড সৃষ্টি করবে বলে আমি মনে করি।”

গ্রামবাসীকে সাধুবাদ জানান তিনি।