রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে ‘ডেটাবেজ’ হচ্ছে

বাংলাদেশে শরণার্থী রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলাদা তথ্যভাণ্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2015, 07:57 AM
Updated : 1 Oct 2015, 10:12 AM

নির্বাচন কমিশনের যুগ্মসচিব জেসমিন টুলী জানান, আগামী সপ্তাহেই নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের তথ্য চেয়ে রোহিঙ্গা শিবির, তিন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর কাছে চিঠি দেওয়া হবে।

বুধবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া বন্ধ করতে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলাদা তথ্যভাণ্ডার তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন।

জেসমিন বলেন, “এখন অন্তত নাম-ঠিকানা পেলেও তারা ভোটার হয়েছে কি না বা চেষ্টা করছে কিনা তা যাচাই করা সম্ভব হবে।”

ছবি ও আঙ্গুলের ছাপসহ রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা গেলে বিদ্যমান ভোটার তালিকায় তাদের শনাক্ত করা এবং ভবিষ্যতে তাদের ভোটার হওয়া ঠেকানো সহজ হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইসির একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জানান, ডেটাবেজ তৈরির জন্য নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সংরক্ষিত তথ্য চেয়ে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার‌্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠানো হবে।

ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিঠির সঙ্গে নিজের, পিতা-মাতা ও স্বামী-স্ত্রীর নাম এবং ঠিকানার তথ্য পূরণ করতে নির্ধারিত ছক পাঠানো হচ্ছে। সব তথ্য পাওয়ার পরই আলাদা ডেটাবেজে তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।”

সরকারি-বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কুতুপালং ও নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নিবন্ধিতসহ মোট দুই লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বসবাস করছেন। 

আরও প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে।

এদিকে চলমান হালনাগাদেও কক্সবাজারে ‘অবিশ্বাস্য’ সংখ্যক ভোটার হওয়ার তথ্য পেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এবারের নতুন তালিকাতেও রোহিঙ্গারা ঢুকে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কমিশন।

হালনাগাদে কক্সবাজারে ৬ শতাংশের কাছাকাছি ভোটার হওয়ার হারকে ‘অস্বাভাবিক’ আখ্যা দিয়েছেন ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনো অনেক রোহিঙ্গা এদেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। সামান্য কিছু টাকার জন্য গুটিকয়েক লোক তাদের সহযোগিতা করছে।”

যাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সহযোগিতার অভিযোগ উঠবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সমন্বয় সভা করেন ইসি সচিব ও এনআইডি মহাপরিচালক।

ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সভায় রোহিঙ্গা ঠেকাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুনরায় ফরম যাচাই ও নিবন্ধন কেন্দ্রে ‘বিশেষ কমিটির’ প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।