‘মৃত ভোটার’ নিয়ে ইসির উদ্বেগ

চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে অন্তত ৫ থেকে ৭ লাখ ‘মৃত ভোটার’ থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন, যাদের নাম বাদ পড়ার কথা।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2015, 02:02 PM
Updated : 29 Sept 2015, 02:28 PM

নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলছেন, মাত্র সাড়ে ছয় লাখ মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে; অথচ এ সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার কথা। আর এর পেছনে মাঠকর্মীদের গাফিলতি দেখছে কমিশন।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইসির তথ্য সংগ্রহকারী গত ২৫ জুলাই থেকে দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু করে।

২২ সেপ্টেম্বর দেশের সব সিটি করপোরেশনসহ ৫১৪ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নিবন্ধন চলবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

‘মৃত ভোটারদের’ তথ্যে গরমিলের শঙ্কায় উদ্বেগ জানালেও ১৭ বছর বয়সী অন্তত ৪২ লাখ ৪০ হাজার ৬৩১ এবং পনের ও ষোল বছর বয়সী ২৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮ জনের তথ্য সংগ্রহের ‘অস্বাভাবিক’ হার নিয়ে কোনো উৎকণ্ঠা নেই সাংবিধানিক সংস্থাটির।

যদিও ২০১৬ সালে ভোটারযোগ্য নাগরিকের ‘টার্গেটের’ দ্বিগুণ তথ্য সংগ্রহ হয়েছে; আর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ভোটারযোগ্য নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক।

এসব বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবশ্যই আমরা মৃত ভোটারের তথ্য অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় উদ্বেগে আছি। বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ সংখ্যা খুবই কম। এক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহকারীদের পুনরায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ দিয়েছি।”

বিদ্যমান ভোটার তালিখা থেকে কর্তনের জন্য হালনাগাদে ৬ লাখ ৯১ হাজার ৬০৬ জন মৃত ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ হয়েছে।

দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে বাৎসরিক মৃত্যুর হার বিবেচনায় ভোটার তালিকা থেকে ১২ থেকে ১৫ লাখ মৃত ব্যক্তির বাদ যাওয়ার ধারণা করছেন সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যুগ্ম পরিচালক এ কে এম ফজলুল হকও ইসির হিসাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

তিনি বলেছেন, “প্রতি হাজারে প্রায় ৬ জন মৃত্যুর হার বিবেচনায় অন্তত ১০ লাখের ওপরে বছরে মৃত ভোটারের সংখ্যা হওয়ার কথা। এরসঙ্গে আগের কিছু থাকলে ইসির ধারণাও সঠিক।”

মৃতভোটারদের হিসেবে গরমিলের কারণে খরচ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন ইসি সচিব।

তিনি বলেন, “সামনে স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে। প্রতিটি কার্ডের দাম পড়বে দেড়শ টাকারও বেশি। সেক্ষেত্রে কয়েক লাখ মৃত ব্যক্তির নামে কার্ড তৈরি হয়ে গেলে কয়েক কোটি টাকার অপচয় হবে।”

এবার হালনাগাদে অনেক এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি না যাওয়ার অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মো. সিরাজুল ইসলাম।

“সঠিকভাবে তথ্য সংগ্রহ হলে এতো কম মৃত ভোটার হতে পারে না। ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিতভাবে প্রতিবছর ৪-৫ লাখ করে মৃতদের নাম কর্তন করা হচ্ছে। অনেকে ভুলে কর্তনের জন্য তথ্য দেয়নি। এখন সব মিলিয়ে এ সংখ্যা অনেক হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহে অবহেলাকারীদের আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না।”