কুষ্টিয়ায় শটগান হাতে সেই যুবক চাকরিচ্যুত পুলিশ

জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ছবিতে যে ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে, তিনি পুলিশ বাহিনীর একজন চাকরিচ্যুত এএসআই এবং স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার আত্মীয়।  

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2015, 01:07 PM
Updated : 16 August 2015, 02:53 PM

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ফেনসিডিল নিয়ে একটি ঘটনায় আনিচুর রহমান ওরফে আনিচ নামের ওই পুলিশ সদস্যকে বছর দুই আগে ঢাকার ভাষানটেক থানা থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি চাকরিচ্যুত হন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঢাকা-ঝালুপাড়া গ্রামের মৃত মোশাররফ হোসেন মণ্ডলের ছেলে আনিচ সম্পর্কে শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের বেয়াই।

মোমিজের বোনের সঙ্গে আনিচের চাচাত ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে বলে তাদেরই এক আত্মীয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

শনিবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেইট এলাকায় মোমিজের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় সবুজ (২৫) নামে এক যুবলীগকর্মী ছুরিকাঘাতে নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত পাঁচজন।

সংঘর্ষের সময় কালো পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা পরিহিত আনিচকে শটগান হাতে দফায় দফায় গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সেই ছবি সংবাদমাধ্যমেও এসেছে।

ট্রাফিক পুলিশের ঢাকা পশ্চিম বিভাগের উপ কমিশনার নেছারুল আরিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বছর দুই আগে তিনি যখন মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার ছিলেন, সে সময় ফেনসিডিল আত্মসাতের ঘটনায় আনিচকে বরখাস্ত করা হয়। তার আগে আনিচ ভাষানটেক থানার এএসআই ছিলেন।

চাকরি যাওয়ার পর থেকে আনিচ নিজের এলাকাতেই থাকছিলেন। তবে শনিবার সংঘর্ষের পর থেকে তাকে দেখা যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানান।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরাম উল হাবিব রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশের হাতে ক্লু রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, অতি দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।”

এদিকে সংঘর্ষে নিহত সবুজের ভাই আরিফ রোববার বিকালে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজ্জাদসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) লাবণী খন্দকার জানান।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রেজা জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি আব্দুল খালেককে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ভোর রাতে সাজ্জাদ হোসেনের লাইসেন্স করা শটগানটি ৫৬ রাউন্ড গুলিসহ জব্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে। তবে থানা কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয় জানাতে রাজি হয়নি।

ডিআইজি একরাম উল হাবিব বলেন, “পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না আমরা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যে-ই হোক, গাফলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”