একমাসেই বেহাল ৪২ কোটি টাকায় নির্মিত সড়ক

নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই রংপুর নগরীর একটি চারলেন সড়কে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

রংপুর প্রতিনিধিশাহজাদা মিয়া আজাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2015, 12:29 PM
Updated : 15 August 2015, 12:29 PM

৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নগরীর মেডিকেল মোড় থেকে মডার্ন মোড় পর্যন্ত সড়কের আট কিলোমিটার এলাকার বেহাল দশা খতিয়ে দেখতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক গবেষণা পরীক্ষাগার থেকে দুজন বিশেষজ্ঞ মঙ্গলবার থেকে রংপুরে অবস্থান করছেন।

তাদের একজন ওই পরীক্ষাগারের নির্বাহী প্রকৌশলী সালমা আখতার। বেহাল সড়কটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার সময় ভিত্তি যথাযথ নিয়মে করা হয়নি। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ভিত্তি দেবে যায়। সেখান পানি জমে থাকার ফলে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।”

“সড়কটি নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতি দুটোই আছে। তবে আমরা প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখছি।”

সড়কটির পাশেই রংপুর কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনাল। ওই টার্মিনালে কথা হয় রংপুর ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মানিকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “রাস্তাটা করার এক মাস হয় নাই, তাতে কার্পেটিং উঠি বড় বড় গর্ত হয়া গেইচে। ওই সড়ক দিয়া ট্রাক ও ট্যাংক লরি নিয়া যাওয়ায় যায় না।” 

রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ তত্ত্বাবধানে ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুর নগরীর ১৬ দশমিক ২৪ কিলোমিটার সড়ককে ৬৫ ফুট প্রশস্ত করে চারলেনে উন্নীত করা হয়।  ২০১১ সালের ২০ মার্চ নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

চলতি বছরের ৩০ জুন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই গণভবন থেকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে চারলেন ওই সড়ক উদ্বোধন করেন।

রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকেই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার মাছের আড়তের সামনের সড়কে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এখন সেই খানাখন্দ ছড়িয়ে পড়েছে ৩৩০ মিটার এলাকা জুড়ে।

এই ৮ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক চারলেনে উন্নীত করতে ব্যয় হয় ৪২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিটুমিনাস কার্পেটিং সারফেস ওয়ার্কে খরচ হয় নয় কোটি টাকা। কাজটি করেছে মেসার্স মাসুমা বেগম নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

তিনি বলেন, “কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাওনা পরিশোধও করা হয়েছে। তবে গর্তগুলো পুনরায় মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার বৃহস্পতিবার থেকে মেরামতের কাজ শুরু করেছেন।” 

সড়কটি নির্মাণের সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ তদারকির মান নিয়ে প্রশ্ন করলে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমি দশ মাস হয় রংপুরে যোগদান করেছি। আমার সময় শূধু বিটুমিনাস কার্পেটিং সারফেস ওয়ার্ক সম্পন্ন হয়েছে।”