প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের এই শরণার্থীদের পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশিদেরই দায়ী করেছেন তিনি।
মন্ত্রিসভার নতুন এই সদস্য বৃহস্পতিবার তার জেলা চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গটি তোলেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, “সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও ৫০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন দেশে আছে। তারা আমাদের শ্রমিকদের বাজার দখল করছে।
“দুই-পাঁচ হাজার টাকার জন্য রোহিঙ্গাদের আমরাই পাসপোর্ট দিই। আমরা না দিলে তারা পাসপোর্ট পাবে না, অপকর্মও করতে পারবে না।”
মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে আছে ২৫ হাজারের মতো, বাকিরা বাইরে।
নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগের মধ্যে থাকা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নেওয়া এবং বাংলাদেশি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রমাণও মিলেছে।
নতুন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান খাত রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়াতে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক রপ্তানির উপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “অদক্ষ শ্রমিক বিদেশে গিয়ে লাভ নেই। অদক্ষ শ্রমিকরা যা পাবে, তার চেয়ে দক্ষরা অনেক বেশি বেতন পাবেন।”
সৌদি আরব ২০ হাজার নারীকর্মী চাইছে জানিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের আছে মাত্র তিন হাজার দক্ষ শ্রমিক। মহিলারা প্রশিক্ষণের জন্য আসেন না। প্রশিক্ষিত হলে আরও অনেক বেশি মহিলাকর্মী পাঠানো সম্ভব।”
মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার দুটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথাও জানান তিনি।
“তারা শ্রমিক নিতে চাইছে। এখন মাত্র ৬০ হাজার টাকা দিয়েই বৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়া যাবে। তারপরও মানুষ কেন সমুদ্রপথে যাবে।”
নুরুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
অস্ট্রেলিয়াতেও শ্রমবাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটি দক্ষ বেকারি শ্রমিক, ঘাস কাটার শ্রমিক, বেবিসিটার, নার্স, চিকিৎসক নিতে আগ্রহী।
বিদেশগামী শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশের ৪১টি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট রয়েছে, যা ৭১টিতে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী।
বিদেশে কেউ মারা গেলে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নগর কমিটির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর কমিটির উপদেষ্টা ইসহাক মিয়া, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানও ছিলেন।
সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরী নুরুল ইসলাম বিএসসিকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা দুজন বিরোধী শিবিরের লোক হিসেবে পরিচিত।