১৯ জনের তালিকা পাঠিয়ে হত্যার হুমকি

সরকারের মন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও ব্লগারসহ ১৯ জনকে হত্যার হুমকি দিয়ে ‘ইত্তেহাদুল মুজাহিদিন’ নামের এক কথিত সংগঠনের নামে সংবাদপত্র কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2015, 10:00 AM
Updated : 12 August 2015, 01:18 PM

বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে আসা ওই চিঠি বা খামে সংগঠনটির কোনো পরিচয় বা ঠিকানা দেওয়া হয়নি। তবে খামের ওপর সিলেট পোস্ট অফিসের সিল ও ১০ অগাস্টের তারিখ রয়েছে।  

২০ জনের নামের তালিকার প্রথমেই থাকা নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নামটি লাল কালি দিয়ে কাটা।

এরপর ধারাবাহিকভাবে ব্লগার আরিফ জেবতিক, সুশান্ত দাশ গুপ্ত, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, আব্দুর রহমান, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর মকবুল হোসেন ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নাম দেওয়া হয়েছে।

তালিকায় এরপর রয়েছে ব্লগার আরিফুর রহমান, অমি রহমান পিয়াল, হুমায়ুন আজাদের ছেলে অনন্য আজাদ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক মাহমুদুল হক মুন্সি, মারুফ রসুল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আরাফাত রহমান, ব্লগার নির্ঝর মজুমদার, ড. আতিক, আশফাক আনুপ ও নূর নবী দুলালের নাম।

এরপর লেখা হয়েছে- “মরন একদিন হবেই বন্ধু, আজ নয়তো কাল/খোদার লাগি খোদার দুশমনের লইবো তাহার প্রাণ.../

“নবীর অপমানে কাদে না তোমার মন!/ কি তোমার পেহচান?

“মরন একদিন হবেই বন্ধু.../লও জালিমের জান...”

যাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, চিঠির শুরুতে তাদের আখ্যায়িত করা হয়েছে ‘ইসলাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার দুশমন, নাস্তিক, সিলেটবিদ্বেষী, সিলেটের কলঙ্ক, স্যাটানিক ব্লগার হিন্দুস্তানি দালাল ও মুসলিম নাম সর্বস্ব মুনাফিক’ হিসেবে।

এই চিঠির সত্যতা কোনো সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চিঠি পাওয়ার পর জানানো হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ের উপ কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি আমরা জানতাম না। আপনার কাছেই জানলাম, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।”

গত শুক্রবার ঢাকার গোড়ানে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়ের বাসায় ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ নিয়ে চলতি বছর চারজন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট একই কায়দায় খুন হলেন, যারা সবাই ধর্মীয় গোড়ামীর বিরুদ্ধে লেখালেখিতে যুক্ত ছিলেন, যুক্ত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চে।

নিলয় হত্যার পর আনসার আল ইসলাম নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কার্যালয়ে ই মেইল পাঠিয়ে দায় স্বীকার করা হয়েছিল। সেখানে আনসার আল ইসলামকে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) বাংলাদেশ শাখা বলা হয়েছিল।

এরপর সোমবার রাতে বরিশাল গণজাগরণ মঞ্চের ছয় কর্মীর ছবি দিয়ে ‘আনসার বিডি’ নামের একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

‘ইত্তেহাদুল মুজাহিদিন’ এর নামে নতুন যে তালিকা পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অনেকেই এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হুমকি পেয়েছেন।