নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জাফরুল্লাহ

বিচারকদের সম্পর্কে কটূ মন্তব্য করে অবমাননার রুলের মুখে পড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জাফরুল্লাহ চৌধুরী আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2015, 04:21 PM
Updated : 9 August 2015, 04:21 PM

রোববার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২’র কাছে তার পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে এভিডেভিট জমা দেন।

পরে সাঈদ আহমেদ রাজা তার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর আদালতে হাজির হতে না পারার কারণ দেখিয়ে সোমবার শুনানির দিন রাখতে আদালতের কাছে আর্জি জানান।

আদালত আর্জি মঞ্জুর করে সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন রাখেন। তবে এর আগে জাফরুল্লাহর বক্তব্য বড় প্রজেক্টরে এজলাস কক্ষে দেখান।

বিচারককে ‘মানসিক অসুস্থ’ বলায় আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, মর্মে দেওয়া রুলে জাফরুল্লাহ এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

গত বুধবার এ বিষয়ে জবাব দেওয়ার দিন দ্বিতীয়বারের মতো নির্ধারিত থাকলেও জাফরুল্লাহর আইনজীবীর সময়ের আবেদনে তা পেছানো হয়।

এই মামলায় জাফরুল্লাহর পক্ষে এ মামলা লড়ার কথা অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদারের। ওই দিনও তার জুনিয়র সাঈদ আহমেদ রাজা হাজির হয়ে সময় প্রার্থনা করেছিলেন।

ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবমাননাকর বিবৃতি দেওয়ায় গত ১০ জুন জাফরুল্লাহকে সাজা দিয়েছিল আদালত।

শাস্তি হিসাবে তাকে এক ঘণ্টা আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

তবে জাফরুল্লাহ নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাকে সতর্ক করে দিয়ে ওই দণ্ড মওকুফ করে দেয়।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের দিন আদালত সাজা ঘোষণার পর জাফরুল্লাহ চৌধুরী রায়ের অনুলিপি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কাঠগড়ায় যাবেন না বলে দীর্ঘসময় অনড় থাকেন।

পরে রায়ের কপি হাতে দেওয়া হলে স্বেচ্ছায় কাঠগড়ায় গিয়ে সাজাভোগ করেন এবং পরে আদালতের বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

সে সময় তিনি বলেন, “আজকের আদালত অবমাননার রায়টা তিনজন বিচারকের মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ। তিনজন বিচারপতির মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ। যেখানে বিচারপতিরা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, সেখানে ন্যায়বিচার হয় না।

“যখন তারা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, তখন যুক্তি থাকে না বলেই তারা আইনের আড়ালে আত্মগোপন করেন। এখানে এই মামলাটার বোঝার বিষয় আছে। আদালত অবমাননার মামলায় তিনটির একটি বিষয় প্রমাণ করতে হয়। স্ক্যান্ডালাইজিং দ্য কোর্ট, কোর্টের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, অবস্ট্রাকশন অব দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব দ্য জাস্টিস, বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, আদালতের ডিগনিটি ক্ষুণ্ন করা।”

আদেশের সময় এজলাসকক্ষে অভিযুক্তদের দাঁড় করিয়ে রাখাটা ‘অভদ্রতা’ মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, “যখন রায় পড়েন তখন সকল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে রাখা অর্থহীন। এটা প্রাগৈতিহাসিক, মধ্যযুগীয় ঘটনা। কিন্তু তারা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। তারপর বলেছেন বয়স, কিন্তু বয়সের সম্মান আমি তাদের কাছে কামনা করি না।”