অবমাননা: জনকণ্ঠের রুল শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে

বিচারকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিবন্ধ প্রকাশ করায় জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলের উপর সোমবার আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি হবে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2015, 06:50 AM
Updated : 19 August 2015, 02:57 AM

জনকণ্ঠের দুই সাংবাদিক রুল শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে আলাদা বেঞ্চ করার আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেয়।

প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ সোমবার বিষয়টি শুনবে।

জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং নিবন্ধের লেখক স্বদেশ রায় ওই নিবন্ধের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য রোববার দিন নির্ধারিত ছিল।

তারা দুজন আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর তাদের আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন আদালতে একটি আবেদন দাখিল করেন, যাতে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠনের অনুরোধ জানানো হয়।

এর ওপর শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জনকণ্ঠে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান এবং ‘অবমাননাকর’ বিভিন্ন অংশ তুলে ধরেন।

পরে আদেশের সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিচার বিভাগ বা প্রধান বিচারপতি কাচের দেয়াল নয়। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটি অঙ্গ বিচার বিভাগ। একজন বিচারকও যদি কলঙ্কিত হয়, তাহলে বিচার বিভাগের ক্ষতি। 

“বিচারক কাচের দেয়াল নয়, যে ইট মারলে ঝন ঝন করে ভেঙে যাবে।”

মৌখিক আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা সবাই একমত হয়েছি, সোমবার আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।”

প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানও এদিন শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২৯ জুলাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায়ের দিন দৈনিক জনকণ্ঠ সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অবমাননার রুল জারি করে আপিল বিভাগ।

‘সাকার পরিবারের তৎপরতা: পালাবার পথ কমে গেছে’ শিরোনামে গত ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠে স্বদেশ রায়ের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

এর একটি অংশে বলা হয়, “৭১-এর অন্যতম নৃশংস খুনী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। নিষ্পাপ বাঙালীর রক্তে যে গাদ্দারগুলো সব থেকে বেশি হোলি খেলেছিল এই সাকা তাদের একজন। এই যুদ্ধাপরাধীর আপিল বিভাগের রায় ২৯ জুলাই। পিতা মুজিব! তোমার কন্যাকে এখানেও ক্রুশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তাই যদি না হয়, তাহলে কিভাবে যারা বিচার করছেন সেই বিচারকদের একজনের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের লোকেরা? তারা কোন পথে বিচারকের কাছে ঢোকে, আইএসআই ও উলফা পথে না অন্য পথে? ভিকটিমের পরিবারের লোকদেরকে কি কখনও কোনো বিচারপতি সাক্ষাত দেয়। বিচারকের এথিকসে পড়ে! কেন শেখ হাসিনার সরকারকে কোন কোন বিচারপতির এ মুহূর্তের বিদেশ সফর ঠেকাতে ব্যস্ত হতে হয়।”

ওই নিবন্ধের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতেই আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও স্বদেশ রায়কে আদালতে হাজির হতে বলে আদালত।