ইসলামের সাথে গ্যোটের এই সম্পর্ককে তার মানবতাবাদী দর্শনের এক বৃহত্তর প্রতিফলন হিসেবে দেখা যেতে পারে।
Published : 10 Jan 2025, 08:01 PM
মূল লেখা: সৈয়দ আবদুল লতিফ
অনুবাদ: নীলিমা রশীদ তৌহিদা
সম্প্রতি আমি লিও টলস্তয়ের ইসলাম সম্পর্কিত ধারণা নিয়ে লিখেছিলাম এবং পাঠকদের থেকে খুবই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। এখন আমি পশ্চিমা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মহান সব ব্যাক্তি ও তাদের ইসলাম সম্পর্কিত চিন্তা-ভাবনার ওপর আমার দৃষ্টিপাত জারি রাখতে চাই এবং শুরুতেই আমি সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিজীবি ব্যক্তিত্বের মধ্যে আমার আদর্শ জোহান উলফগ্যাং ফন গ্যোটের দিকে মনোনিবেশ করতে চাই।
‘’এটা বোকামি যে, প্রত্যেকে তার ক্ষেত্রে
নিজস্ব মতামতের প্রশংসা করছে!
যদি ইসলাম মানে হয় সৃষ্টিকর্তার প্রতি আত্নসমর্পণ,
তবে আমরা ইসলামেই বাঁচি, ইসলামেই মরি।‘’ (West-East Divan)
জোহান উলফগ্যাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও পলিম্যাথ এবং তাকে জার্মান আলোকায়নের যুগের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লেখক হিসেবে গ্যোটেকে অনেক দিক থেকেই জার্মানির শেক্সপিয়ার বলা হয়—তবে গ্যোটের প্রভাব ও কাজ সাহিত্যকে ছাড়িয়ে দর্শন, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানসহ জ্ঞানের অন্যান্য শাখায়ও বিস্তৃত।
গ্যোটে তার পুরো জীবন ধরে ইসলাম ও এর সমৃদ্ধ সাহিত্যিক ও দার্শনিক ঐতিহ্যের প্রতি মুগ্ধতা পোষণ করেছিলেন। ইসলামের প্রতি তার মনোযোগ কখনোই শুধুমাত্র ভাসা-ভাসা ছিল না; গ্যোটের রচনায় ইসলামের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতিফলন রয়েছে যা তার সাহিত্যিক কাজ, ব্যক্তিগত লেখা ও কথোপকথনে সুস্পষ্ট। তেইশ বছর বয়সে, মুহম্মদ (স) এর প্রশংসায় তিনি একটি চমৎকার গীতিকবিতা রচনা করেছিলেন এবং সত্তর বছর বয়সে তিনি একথা অকপটে স্বীকার করেন যে “বিস্ময়ের সাথে সেই পবিত্র রাতটি উদযাপন করা যেদিন সৃষ্টিকর্তার তরফ থেকে নবীর (স:) ওপর সম্পুর্ণরূপে কুরআন নাযিল হয়েছিল’’ বিষয়টি নিয়ে তিনি ভেবেছিলেন।
আশ্চর্যজনকভাবে গ্যোটে একবার বলেছিলেন যে, তিনি ‘’মুসলিম হতেও পারেন’’—এ কথাটি তিনি অস্বীকার করেন না। ইসলামের প্রতি তার আগ্রহ আংশিকভাবে তার ব্যাপক মননশীল কৌতূহল ও চিরন্তন সত্যের সন্ধান দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তিনি ইসলামের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক দিকগুলোর পাশাপাশি এর সমৃদ্ধ কাব্যিক ও রহস্যময় বিষয়গুলোতেও তিনি আকৃষ্ট ছিলেন। নবী মুহম্মদ (স:) ও কুরআনের প্রতি তার মুগ্ধতা তার বিভিন্ন রচনায় স্পষ্ট ছিল, বিশেষভাবে তার কবিতা সংকলন ‘west-eastern divan’ এ, যা তিনি ১৮১৪ থেকে ১৮১৯ সালের মধ্যে রচনা করেছিলেন।
এই সংকলনটি পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সংলাপের একটি উদযাপন যা পারস্যের কবি হাফিজ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। গ্যোটে লিখেছিলেন—‘’যে নিজেকে ও অপরকে জানে, সে বোঝে যে পূর্ব ও পশ্চিম আর আলাদা নয়।‘’ এই লাইনটি পূর্ব ও পশ্চিমের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্যতার প্রতি তার বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সীমারেখার বাইরে গিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ মানবিক অভিজ্ঞতার স্বপ্নকে প্রকাশ করে—এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা ইউরোপীয় আলোকায়নের যুগের চিন্তকদের মধ্যে তেমন বিরল নয়।
গ্যোটে ও মুহম্মদ (স:)
নবী মুহম্মদ (স:)-এর প্রতি গ্যোটের গভীর শ্রদ্ধা ইসলামের প্রতি গ্যোটের আকর্ষণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তার এই শ্রদ্ধার কথা তিনি তার কবিতা “Mahomets Gesang” -এ প্রকাশ করেছেন; এ কবিতাটিতে মুহম্মদকে (স:) প্রকৃতির এক প্রগতিশীল ও রূপান্তরকারী শক্তি হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। এই কবিতায় গ্যোটে মুহম্মদকে (স:) একটি শক্তিশালী জলপ্রবাহের সাথে তুলনা করা হয়েছে যা ছোট্ট একটি ঝরনা থেকে এক বিরাট নদীতে রূপান্তরিত হয়। এই তুলনাটি নবী (স:)-এর আধ্যাত্নিক যাত্রা এবং পৃথিবীতে তার বার্তার বিস্তৃত প্রভাবের একটি প্রতীক।
জার্মান দার্শনিক জর্জ উইলহেল্ম ফ্রেডরিখ হেগেল এই কবিতার বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি তার বিশ্লেষণে বলেন, “এভাবেই মুহম্মদের সাহসী আগমন, বিশদভাবে তার ধর্মের ছড়িয়ে পড়া, এবং সকল মানুষকে একটি ধর্মের অধীনে একত্রিত করার বিষয়টি একটি শক্তিশালী নদীর প্রতীকের মাধ্যমে এই কবিতায় সফলভাবে চিত্রিত হয়েছে।‘’
গ্যোটে ও কুরআন
গ্যোটের ব্যক্তিগত কথোপকথন/ চিঠিপত্র ও চিন্তাভাবনায় কুরআনের প্রতি তার অগাধ শ্রদ্ধার প্রমাণ পাওয়া যায়। জোহান পিটার একারমানের সাথে একটি কথোপকথনে গ্যোটে কুরআনের নৈতিক শিক্ষা ও কাব্যিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘’এটি মানবজাতির জন্য প্রকাশিত এমন একটি গ্রন্থ যা সব সময় ও সব জায়গায় প্রযোজ্য।‘’ এই মন্তব্যটি তার দৃষ্টিভঙ্গিতে কুরআনকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের একটি কালজয়ী ও সর্বজনীন উৎস হিসেবে তুলে ধরে।
বস্তুত, বাইবেল ছাড়া, অন্য যে ধর্মীয় গ্রন্থটি গ্যোটে সবচেয়ে বেশি অধ্যয়ন করেছিলেন, তা হলো কুরআন। তিনি কুরআন বহুবার পড়েছেন এবং এমনকি কিছু সূরা আরবিতে লিখেও রেখেছেন। কুরআনের সারাংশ নামে তিনি একটি সংকলন করেছিলেন যেখানে তিনি বিভিন্ন পর্যালোচনামূলক প্রবন্ধ সংগ্রহ করেছিলেন। এই গ্রন্থটি বর্তমানে ডুসেলডর্ফের গ্যোটে জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে এবং গ্রন্থটিতে কুরআনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অংশ অধ্যয়িত হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।
গ্যোটে ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য
ইসলামের প্রতি গ্যোটের আগ্রহ কেবল বুদ্ধিগত শ্রদ্ধার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; এতে একটি আধ্যাত্মিক দিকও ছিল। ইসলামের সুফি ঐতিহ্য দ্বারা তিনি প্রভাবিত হন, যা মিস্টিসিজম ও সরাসরি ঐশ্বরিক অভিজ্ঞতার ওপর জোর দেয়। সুফি কবিতার বিষয়বস্তু: প্রেম, ঐক্য ও সত্যের অনুসন্ধান—যার সাথে গ্যোটের আধ্যাত্মিক ভাবনার গভীর মিল ছিল। এর প্রভাব তার পরবর্তী রচনাগুলোতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় যেখানে তিনি প্রায়ই ইশ্বরের প্রতি ভালোবাসা ও মানবিক সংগ্রামের বিষয়গুলো অনুসন্ধান করেছেন।
রুমি, হাফিজ, সাদী, আত্তার, কুরআনের তাফসির, দোয়া, ও একটি আরবি-তুর্কি অভিধানসহ ইসলাম ও সুফি ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য অনেক প্রকাশনার মূল আরবি পাণ্ডুলিপি তিনি সংগ্রহ করেছিলেন।
রুমিকে নিয়ে একটি লেখায় গ্যোটে আল্লাহকে ডাকা ও এর কল্যাণকে স্বীকার করে বলেছেন:
“তথাকথিত মুহম্মদীয় তসবিহ (জপমালা), যার মাধ্যমে আল্লাহর নাম ৯৯টি গুণাবলী দিয়ে মহিমা্ন্বিত করা হয়, তা একটি প্রশংসনীয় প্রার্থনা। ইতিবাচক ও নেতিবাচক গুণাবলী কল্পনাতীত সত্তার (Wesen) দিকে ইঙ্গিত করে; পূজক বিস্মিত হয়, কল্পনাতীত সত্তার কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং শান্তি পায়।” (WA I, 7, 59)
গ্যোটে ও খ্রীষ্টীয় ঐতিহ্য
ইসলামের সাথে গ্যোটের এই সম্পর্ককে তার মানবতাবাদী দর্শনের এক বৃহত্তর প্রতিফলন হিসেবে দেখা যেতে পারে। তিনি মানবিক অভিজ্ঞতার মধ্যকার মিল ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্বে গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন। তার রচনাগুলো বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মের মধ্যে আলাপচারিতায় উৎসাহ দেয় যা পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধাকে সমর্থন জানায়— খুব বিশেষভাবে প্রতীচ্যের খ্রীষ্টান ও প্রাচ্যের মুসলিমসমধ্যে। এমন একটি পৃথিবী যেখানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে প্রায়ই শত্রুতা এবং ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে বিভেদের সৃষ্টি হয় সেখানে ইসলামের প্রতি গ্যোটের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে পারস্পরিক প্রশংসা ও সংলাপের মাধ্যমে ঐক্য ও সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
তবে এর পরেও গ্যোটে কিন্তু খ্রীষ্টান ধর্মের সমালোচনা থেকে মুক্ত ছিলেন না।
গ্যোটে বলেছেন যে, “গির্জার মতবাদে অনেক অর্থহীন কথা-বার্তা রয়েছে।‘’ তিনি খ্রীষ্টীয় দৃষ্টভঙ্গি থেকে যীশুকে 'ঐশ্বরিক' হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার “Divan” কবিতায় তিনি ঈশ্বরের একত্বের কথা বলেন:
“যীশু পবিত্রতা অনুভব করেছিলেন এবং শান্তভাবে ভেবেছিলেন
শুধু্মাত্র এক ঈশ্বরকে;
যে নিজেকে ইশ্বর ভাবে
সে তার পবিত্র ইচ্ছার বিরোধিতা করে।
এবং এভাবেই ন্যায্যতা বিকশিত হতে হবে
যেটি মুহম্মদ অর্জন করেছিলেন;
শুধুমাত্র এক ঈশ্বরের বিশ্বাসে
তিনি পুরো পৃথিবীকে জয় করেছিলেন।” (WA I, 6, 288 ff)
যীশু এবং মুহম্মদ (স) এর পাশাপাশি, ‘’east-west divan’’-এ গ্যোটে আব্রাহাম, মূসা ও দাউদকে ঈশ্বরের একত্বের প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এটি একটি জানা কথা যে গ্যোটে ক্রুশের চিহ্নের প্রতি এক ধরনের প্রবল বিরাগ অনুভব করতেন। তিনি লিখেছিলেন:
“এবং এখন তুমি একটি প্রতীক নিয়ে এসেছ…
যা আমি অন্য সব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি।
এই সব আধুনিক অর্থহীনতা
তুমি আমাকে সিরাসে নিয়ে যাচ্ছো!
এর সকল কঠোরতায়, আমি কি,
রেখাকৃত দুইটি কাঠের টুকরোর গান গাইব?”
অবশেষে, ‘Divan’-এর ‘Seven sleepers’ কবিতায় তিনি যিশুকে একজন নবী হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন,
‘’বহুবছর ধরে এফেসাস
নবী যিশুর শিক্ষাকে সম্মান করে।
(ভালো মানুষের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক!)’’ (WA I, 6, 269)
ইসলাম নিয়ে গ্যোটের চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে তার ইসলামের আধ্যাত্মিক, নৈতিক, ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পায়।
তার রচনাবলি, বিশেষত ‘west-eastern divan’ মানুষের সংস্কৃতির পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতি তার বিশ্বাস এবং কুরআন ও নবী মুহাম্মদ (স)-এর প্রতি তার শ্রদ্ধা প্রকাশ করে। ইসলামের সাথে গ্যোটের সংযোগ দর্শনের প্রতি তার বিস্তর আগ্রহ এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সীমানা অতিক্রম করে সর্বজনীন সত্য খুঁজে পাওয়ার প্রতিশ্রুতির সাক্ষ্য বহন করে। এ কারণে পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামের গভীরতর বোঝাপড়া ও মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠায় গ্যোটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে জায়গা পেয়েছেন।
গ্যোটের কাজ মুসলিম বিশ্বেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। (বস্তুত, গ্যোটে যে সেতুটি তৈরি করেছিলেন, তা দু দিকেই কাজ করে।) তার এই প্রভাবটি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম কবি ও চিন্তাবিদ মুহাম্মদ ইকবালের কাজে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ১৯২৪ এ প্রকাশিত ইকবালের পয়াম-এ-মাশরীক (পূর্বের বার্তা) গ্যোটের West-ostlicher Divan এর সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। তার Divan এ, গ্যোটে পশ্চিমা বিশ্বের অত্যাধিক বস্তুবাদী আক্ষেপ করে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি আশা করেছিলেন যে পূর্বাঞ্চল ইউরোপে আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ পুনরুজ্জীবিত করার বার্তা প্রদান করবে। ইকবাল তার কাজের মাধ্যমে অনুভূতি, ব্যগ্রতা, ও গতিশীলতার চর্চার প্রয়োজনীতার উল্লেখ করে পশ্চিমাদের নৈতিকতা, ধর্ম ও সভ্যতার গুরুত্বকে মনে করিয়ে দেয়।
তিনি এটা দাবি করেন যে, একজন ব্যক্তি কখনোই উচ্চতর স্তরে পৌঁছাতে পারবে না যতক্ষণ না সে আধ্যাত্মিকতার প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে পারে।
এবং ব্যক্তিগতভাবে বললে, আমার ইসলাম গ্রহণের পথযাত্রায়, গ্যোটের ‘west-east divan’-এর অসামান্য অবদান রয়েছে। আমার স্নাতকোত্তর পড়াশোনাকালীন সময়ে এবং ইসলাম গ্রহণের পূর্ববর্তী বছরগুলোতে ইসলাম সম্পর্কিত আমার চিন্তাভাবনা গঠনে আমার টেবিলে সবসময় তিনটি বই ছিল: বাইবেল, কুরআন ও গ্যোটের ‘west-east divan’.
এটা আমার আমার প্রত্যাশা যে, গ্যোটের কাজ ও ইসলাম সম্পর্কিত তার চিন্তাভাবনা মুসলিম ও খ্রিস্টান, পূর্ব ও পশ্চিমের সকলেই আরও বিস্তরভাবে পড়বে ও বুঝবে। পশ্চিম ইউরোপের মহান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শীর্ষে অবস্থান করেও গ্যোটে, তার গভীর চিন্তা-চেতনায়, নিজেকে, অন্তত আধ্যাত্মিক ও দার্শনিকভাবে, একজন মুসলিম হিসেবে দেখেছিলেন — যদিও তিনি বাহ্যিকভাবে ইসলামের অনুশীলন ততটা করেননি। আশা করি, গ্যোটের প্রদর্শিত ‘অন্য’কে দেখা ও বোঝার এই উন্মুক্ততা ও শ্রদ্ধার এই বোধশক্তি টিকে আমরা সত্যিকারঅর্থেই মূল্যায়ন করতে পারব—আমারা সবাই সৃষ্টিকর্তার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি যতক্ষণ না আমরা তাকে পাই। তিনিই একমাত্র।
(অনলাইন Medium পত্রিকায় ১৯ মে ২০২৪ সালে প্রকাশিত Goethe's Embrace of Islam শীর্ষক নিবন্ধের বাংলা তর্জমা)