রাজধানী কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

|

ছবি: রয়টার্স

)<div class="paragraphs"><p>রাজধানী কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। </p></div>
বিশ্ব

সুদের হার কমালো শ্রীলঙ্কা, ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত

Byনিউজ ডেস্ক

মূল্যস্ফীতি তুলনামূলক সহনীয় হয়ে আসায় এবার মূল সুদের হার ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বা আড়াই শতাংশ কমিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

এর মাধ্যমে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বীপদেশটি যে ফের প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যাবর্তনে প্রস্তুত হচ্ছে তারই বার্তা মিলছে।

নতুন ঘোষণায় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিবিএসএল আমানতে সুদের হার ও ঋণে সুদের হার ১৫ দশমিক ৫ ও ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ১৩ ও ১৪ শতাংশ করেছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার স্থিতিশীল রাখবে বলে বেশিরভাগ বিশ্লেষকের প্রত্যাশা থাকলেও অর্থনৈতিক সংকট যখন মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল, সেই ২০২২ সালের মার্চের পর এখনই দেশটিতে সুদের হার সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছেছে।

“মূল্যস্ফীতি দ্রুতগতিতে কমা, মুল্যস্ফীতিজনিত অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়া এবং লেনদেনে ভারসাম্যজনিত চাপ সহজ হওয়া, যার দরুন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির দিকে প্রত্যাবর্তন শক্তিশালী হচ্ছে, এসব বিবেচনায় নিয়ে নীতি সুদহার কমানো হয়েছে,” বলেছে সিবিএসএল।

“সুদ হার কাঠমো স্বাভাবিকীকরণ ও অর্থনৈতিক কাঠামোর ব্যাপকতার গতি বাড়ানো এবং আর্থিক বাজারের ওপর চাপ কমিয়ে অর্থনীতির চাকাকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর্যায়ে নিয়ে যাবে এই আশা থেকে সুদের হার কমানো হয়েছে,” বলেছে তারা।

শ্রীলঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ কলম্বো কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স এপ্রিলের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে নেমে মে-তে ২৫ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়ায়, যা সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির দাপটে কাঁপতে থাকা অর্থনীতির ওপর চাপ অনেকখানি কমিয়েছে।

আগের বছরের তুলনায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই প্রাইস ইনডেক্স ৬৯ দশমিক ৮ শতাংশে উঠেছিল। দেশটিতে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ, গত বছরের সেপ্টেম্বরেও যা ছিল ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতির সীমা চলতি বছরের জন্য ১৫ দশমিক ২ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে; কিন্তু সিবিএসএলের লক্ষ্য আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী, তাদের চোখ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই মূল্যস্ফীতিকে এক অংকের ঘরে নিয়ে আসা।

“সবমিলিয়ে মূল্যস্ফীতি চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের শুরুর দিকেই এক অংকের ঘরে চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে; প্রান্তিকের মাঝামাঝি পর্যায়ে সেটি একক অংকের ঘরের মাঝখানে কোথাও থাকবে,” বলেছে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

১৫ জন বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদের মধ্যে ১৩ জনই চলতি বছরের চতুর্থ নীতি সুদহার ঘোষণায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার স্থিতিশীল রাখবে বলে ধারণা করেছিলেন।

মূল্যস্ফীতি কমাতে গত বছর সিবিএসএল সুদের হার রেকর্ড ৯৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছিল। এ বছরের মার্চেও বেসিস পয়েন্ট ১০০ বাড়ানো হয়েছিল।

“সরকারি ব্যয় বেশি হয়ে যাওয়ায় সুদের হার কমানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। মুদ্রার মান বেড়ে যাওয়ার ফলেও তাদের জন্য সুদের হার কমানো সহজ হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠন পরিকল্পনা ঝুলে থাকায় বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমবে কিনা, তা প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যাচ্ছে,” বলেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএএলের প্রধান কৌশলবিদ উদিশান জোনাস।

শ্রীলঙ্কা এ বছরের মার্চেই আইএমএফের কাছ থেকে ২৯০ কোটি ডলার ঋণ নিশ্চিত করেছিল; ঋণ পুনর্গঠন সংক্রান্ত আলোচনাও এই বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য আছে তাদের।

দ্বীপদেশটির জিডিপি গত বছর ৭ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল, এবার তা ৩ শতাংশ হবে বলে অনুমান আইএমএফের।

আর সিবিএসএল বলছে, ২০২৩ সালের শেষদিক থেকে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করবে বলে প্রত্যাশা তাদের।

“অর্থনীতির এই ঘুরে দাঁড়ানোর পর্যায়ে মুদ্রাস্ফীতির দ্রুত হ্রাস এবং চাহিদাজনিত অত্যধিক চাপের সম্ভাবনা কম থাকায় সামনের দিনগুলোতে নীতি ধীরে ধীরে শিথিল করার জন্য জায়গা তৈরি হচ্ছে,” বলেছে ব্যাংকটি।

SCROLL FOR NEXT