বিশ্ব

নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ভ্যাল ফিশ্চ মারা গেছেন

Byনিউজ ডেস্ক

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি রাজ্যের প্রিন্সটনে নিজ বাসভবনে ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে তার মৃত্যুর খবর জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

১৯৮০ সালে সহকর্মী জেমস ক্রোনিনের সঙ্গে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ফিশ্চ। দীর্ঘদিন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন তিনি।

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি আবিষ্কার বলে যে, প্রত্যেকটি প্রাথমিক কণিকার একটি সমান ভরের ও বিপরীত আধানের একটি প্রতিকণিকা আছে। এই দুটি পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে ভর ধ্বংস হয়ে থাকবে শুধু শক্তি।

১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ডের ব্রুকহ্যাভেন জাতীয় গবেষণাগারে কাজ করার সময় ফিশ্চ ও ক্রোনিন এটি আবিষ্কার করেন। তারা দেখতে পান যে, পদার্থ ও প্রতিপদার্থ পদার্থবিজ্ঞানের যে আইনগুলো মেনে চলে তাতে সামান্য পার্থক্য আছে।

নিজেদের এই আবিষ্কারের ব্যাখ্যায় পদার্থবিদদ্বয় বলেন, এর অন্যতম ফলাফল হতে পারে, কেউ যদি মহাবিশ্বের ইতিহাসকে পেছন দিকে চালাতে শুরু করে, তাহলে পদার্থবিজ্ঞানের আইনগুলো সম্ভবত একইরকম থাকবে না।

এই আবিষ্কার গ্যালিলিওর সময় থেকে চলে আসা বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান নীতিগুলোর একটির সঙ্গে বিরোধ তৈরি করে।

কিন্তু প্রাথমিক মহাবিশ্বে পদার্থ ও প্রতিপদার্থ স্বাভাবিক ধ্বংস থেকে কিভাবে রক্ষা পেয়েছে তা ফিশ্চ ও ক্রোনিনের আবিষ্কার থেকে ব্যাখ্যা করা যায়। এই রক্ষা পাওয়া পথ ধরেই পরবর্তী সময়ে মহাবিশ্বে নক্ষত্র, গ্যালাক্সি ও জীবনের উদ্ভব হয়েছে।

এই বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করেই শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের কসমোলজিস্ট (সৃষ্টিতত্ত্ববিদ) মাইকেল টার্নার বলেছেন, “আমরা এখন বিশ্বাস করি, ওই সামান্য পার্থক্যটুকুর কারণেই বিশ্ব এ পর্যন্ত এসেছে।”

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির নোবেলজয়ী অধ্যাপক স্যামুয়েল টিং, ফিশ্চ ও ক্রোনিনের আবিষ্কারটিকে “বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

১৯২৩ সালের ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল মেরিম্যানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ফিশ্চ। সেখানে তার বাবা স্কুল শিক্ষক ও একটি গরুর খামারের মালিক ছিলেন।

পরে তারা ৩০ মাইল দূরের শহর গর্ডনে চলে যান। সেখানকার একটি কলেজ থেকেই গ্রাজুয়েট হন ফিশ্চ।

এর আড়াই বছরের মাথায় ফিশ্চ ম্যানহাটন প্রজেক্টে (অ্যাটম বোমা প্রজেক্ট) একজন টেকনিশিয়ান হিসেবে যোগ দেন। চলে যান নিউ মেক্সিকোর লস আলমোসে।

জাপানের নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত অ্যাটম বোমার ডেটোনেটরের অন্যতম নকশাকার ছিলেন ফিশ্চ।

লস আলমোসে তিন বছর কাজ করার পর তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। নিজের পিএইচডি’র গবেষণায় তিনি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের প্রকৃত আয়তন উদঘাটন করেন।

পিএইচডি’র পর তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

SCROLL FOR NEXT