ছবি: ইউটিউব ভিডিও

)<div class="paragraphs"><p>ছবি: ইউটিউব ভিডিও</p></div>
বিশ্ব

স্যানিটারি প্যাড নিয়ে কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্যে ভারতে তোলপাড়

Byনিউজ ডেস্ক

ভারতের বিহারে বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাডের জন্য এক স্কুলছাত্রীর অনুরোধে উচ্চপদস্থ একজন সরকারি কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

স্যোশাল মিডিয়ায় ওই কর্মকর্তাকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। তার মন্তব্য খুবই ‘ন্যাক্কারজনক’ আখ্যা দিয়েছেন অনেকেই। অনেকে আবার তার সরকারি কর্মকর্তা পদে থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, বিহারে ইউনিসেফের আয়োজনে এক ওয়ার্কশপে একজন কিশোরী বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড দেওয়ার ওই আর্জি জানিয়েছিল।

এর জবাবেই বিতর্কিত মন্তব্য করেন হারজত কৌর ভামরা নামের উধর্বতন ওই নারী সরকারি আইএএস কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “এরপর ছাত্রীরা শিগগিরই সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে পোশাক, জুতা, এমনকী কনডম পর্যন্ত প্রত্যাশা করবে।”

ভারতে মেয়েদের ঋতুস্রাব এখনও ট্যাবু। অনেকে ঋতুস্রাবকে ভালচোখেও দেখেনা। কখনও কখনও এই সময়টিতে নারীরা নিষ্ঠুর, অমানবিক পরিস্থিতিতে বাস করতে বাধ্য হয়।

তাছাড়া, ভারতে মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যসুবিধার অভাবও আছে। এ জন্য ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর প্রতিবছরই স্কুল থেকে ঝরে পড়ে প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ মেয়ে।

ভারতে সবচেয়ে গরিব রাজ্যগুলোর অন্যতম বিহার। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের হিসাবমতে, সেখানে মাত্র ৫৯ শতাংশ নারী ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা ব্যবহার করে।

গত মঙ্গলবার বিহারের রাজধানী পাটনায় নারী ও শিশু উন্নয়ন নিয়ে ইউনিসেফ এর পক্ষ থেকে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল বিহারের নারীদের যাবতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা এবং এসব সমস্যা নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা।

সেই অনুষ্ঠান চলাকালেই একজন স্কুলছাত্রী সেখানে উপস্থিত সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা হারজত কৌরকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, “সরকারের পক্ষ থেকে কি ২০-৩০ রূপিতে স্যানিটারি প্যাড স্কুলে স্কুলে দেওয়া যায় না?”

ওই ছাত্রী তার স্কুলের ভাঙা টয়লেট নিয়েও কথা বলেন এবং জানান, এ টয়লেট ব্যবহার করা কঠিন। অনুষ্ঠানে দর্শকশ্রোতাদের বেশির ভাগই ছিল ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী।

স্কুলছাত্রীর প্রশ্নে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ হন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হারজত কৌর। তিনি একইসঙ্গে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন আমলাও।

ওই ছাত্রীর প্রশ্নের জবাবে হারজত বলেন, “তোমাকে কেন সব কিছু সরকারের কাছ থেকে নিতে হবে? এই রকম চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে হবে। এটা তোমারা নিজে কর।”

একথার পর ওই ছাত্রী আরও বলেন, জনগণের ভোটেই সরকার গঠিত হয়। তাই সরকারের কাছ থেকেই সমাধান প্রত্যাশা করছেন তিনি। এতে আরও রেগে গিয়ে হারজত বলেন, “এটা অত্যন্ত বোকামি। তাহলে ভোট দিও না। পাকিস্তান হয়ে যাও। তুমি কি অর্থ আর পরিষেবার জন্যই ভোট দাও?”

হারজোতের সঙ্গে শিক্ষার্থীর এ কথোপকথন দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে হারজত দাবি করেন, ওই অনুষ্ঠান নিয়ে যে প্রতিবেদন হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুল। প্রথম যে হিন্দু পত্রিকায় তার মন্তব্য ছাপা হয়েছে সেই পত্রিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দিয়েছেন হারজত কৌর।

SCROLL FOR NEXT