খেলা

বাংলাদেশেও মেয়েদের লিগ আয়োজনের সময় এসেছে: সাবিনা

Byমোহাম্মদ জুবায়ের

প্রথমবারের মতো ভারতের লিগে খেলতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?

সাবিনা খাতুন: ওখানে সবকিছুই ভালো ছিল। ফাইনাল রাউন্ডে আমরা ভালো করছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেমি-ফাইনাল জিততে পারলাম না; এটাই সবচেয়ে খারাপ লাগার। এছাড়া বাকি সবকিছুই ভালো ছিল। আসলে ফাইনাল রাউন্ডে যে সাতটা দল খেলেছিল, তারা সবাই ভালো ছিল। যে কারণে আমরা শেষ পর্যন্ত সেমিতে গিয়ে আটকে গেলাম।

আপনাদের প্রতি সেথু এফসির খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের মনোভাব কেমন ছিল?

সাবিনা: শুরু থেকেই ওরা খুবই ইতিবাচক ছিল আমাদের প্রতি। আমাদের পারফরম্যান্সে খুশি। সতীর্থরাও আমাদের খুব আপন করে নিয়েছিল। বলতে পারেন, অনেকটা ঘরোয়া পরিবেশে ছিলাম আমরা।

আর সমর্থকরা?

সাবিনা: আসলে ওখানেও মাঠে দর্শক কম। কিন্তু যারা মাঠে আসত, তাদেরও আমার প্রতি বিশ্বাস ছিল। তারা বিশ্বাস করত, আমি এফোর্ট দিলে ম্যাচ বের করে নিতে পারবে এএফসি।

সেমি-ফাইনালে সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারার হতাশাই কি তাহলে বেশি?

সাবিনা: প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই আমি গোল করেছি। দলও ভালো খেলেছ। যে লক্ষ্য নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটা পূরণ হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, এর চেয়েও ভালো করতে পারতাম। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি বলতে আমি চেষ্টা করেছি। শুরুর দিকে দুইটা ম্যাচে নিজেকে অতটা মেলে ধরতে পারিনি। কিন্তু পরে মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম।

ওরা আসলে আমাদের ওপর নির্ভর করেছিল। আমরা আরও ভালো করতে পারলে সেথু এফসিও আরও ভালো করতে পারত।

ক্লাবে অনুশীলন সুবিধা কেমন?

সাবিনা: জাতীয় দলের মতো অতটা সুবিধা ওদের ক্লাবে নেই। কিন্তু তারপরও যতটুকু ছিল, তাতে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তারা পেশাদার এবং সবকিছু পরিকল্পনামাফিক করছে।

মালদ্বীপে খেলেছেন। এবার ভারতেও খেললেন। এখন কী মনে হচ্ছে মেয়েদের জন্য বাংলাদেশেও লিগ দরকার?

সাবিনা: অবশ্যই। লিগ ছাড়া আপনি খেলোয়াড় পাবেন কোথায়? লিগ ছাড়া তো তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে না। তাছাড়া আমাদের দেশে মেয়ে ফুটবলারদের জন্য খুব একটা সুযোগ সুবিধাও নেই। যদি লিগ হয়, তাহলে সেখানে অনেক মেয়ে খেলার সুযোগ পাবে। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ার সুযোগও থাকবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশেও মেয়েদের জন্য লিগ করার সময় চলে এসেছে।

ফাইনাল রাউন্ডে সেথু এফসির ১১ গোলের মধ্যে ৬টি আপনার। কৃষ্ণা রানী সরকার আপনার মতো খেলার সুযোগও পাননি। গোলও পাননি…।

সাবিনা: আসলে ওদের লিগে একটা দলে ১৮ জনের স্কোয়াড়ে দুই জন বিদেশি থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু ম্যাচের একাদশে খেলতে পারবে মাত্র একজন। এ কারণেই আমাদের খেলার সুযোগটা ছিল একটু কম। বাকিটা আসলে কোচই ঠিক করেছেন কে খেলবে; কৃষ্ণা নাকি আমি।

সেথু এফসিতে কি আগামী লিগেও খেলবেন?

সাবিনা: আমি মনে করি, ওরা আমাদের আবারও ডাকবে। চলে আসার সময় ওদের কর্মকর্তারাও আমাকে তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছে। আসলে অনেক কিছুই পরে বদলে যায়। তাই নিশ্চিত বলতে পারব না, খেলব কিনা । তবে, এতটুকু বলতে পারি, আমাদের পারফরম্যান্সের কারণে বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য ইন্ডিয়ান লিগে খেলার দরজা খুলে গেল।

SCROLL FOR NEXT