মো. সবুজ হোসাইন।
তিন বছর আগে সৌদি আরবে যাওয়া সবুজ চেয়েছিলেন এবারের ঈদটা মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গেই কাটাবেন, তাই ঈদের আগে দেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।
তবে সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোয় তার সেই চাওয়া আর পূরণ হলো না। তাই তার শোকাহত মায়ের চাওয়া অন্তত সন্তানের মরদেহটি যেন দ্রুত দেশে নিয়ে আসা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৩ নম্বর চরমোহনা ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়পুর গ্রামের মো. সবুজ হোসাইন।
৩০ বছরের সবুজ গ্রামের ডালি বাড়ির মো. হারুন ডালির ছেলে। বাড়িতে তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী ও ছয় বছরের এক সন্তান রয়েছে।
মঙ্গলবার সবুজের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে ওই বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
সবুজের বাবা হারুন বলেন, সবুজ প্রায় ৩ বছর ধরে সৌদি আরবের আবহা ডিস্ট্রিক্টে একটি কোম্পানিতে কাজ করছে। সবার সঙ্গে ঈদ করতে এবার তার দেশে আসার কথা। তার আগে রোজায় ওমরাহ হজ করতে মক্কায় যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী বাসটিতে উঠেছিল সবুজ।
তিনি জানান, সবুজের লাশ দেশে নিয়ে আসার বিষয়ে সে দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। দূতাবাসের সহায়তা ও পরামর্শক্রমে লাশ দেশে আনা হবে, নাকি সে দেশে দাফন করা হবে এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে দ্রুততম সময়ে সরকারি খরচে যেন তার ছেলের লাশটি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় এই দাবি জানান সবুজের মা।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের লাশ সৌদির আল বাহা ডিস্ট্রিক্টের এক হাসপাতালের হিমঘরে রয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানিয়েছে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন আল আখবারিয়া জানিয়েছে, ওমরাহযাত্রীদের বাসটি খামিস মুশাইত শহর থেকে রওনা হয়ে মক্কায় যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টার দিকে আসির প্রদেশের আকাবা শার সড়কে সেটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
একটি সেতুর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি পাহাড়ি দেয়ালে ধাক্কা খায় এবং আগুন ধরে যায়। বাসটির ব্রেকে সমস্যা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে সৌদি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
এ ঘটনায় ২২ ওমরাহ যাত্রী মারা গেছেন যার মধ্যে সবুজসহ ৮জনই বাংলাদেশি। এ ছাড়া ঐ ঘটনায় আহত ২৯ জনের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা যায়।
চরমোহনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিক পাঠান বলেন, “প্রবাসে সবুজের এ অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।”