সমগ্র বাংলাদেশ

মশার উপদ্রবে চাঁদপুরে ডেঙ্গু আতঙ্ক

Byআল ইমরান শোভন

জেলা শহরের এসবি খালসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় নালা-নর্দমা আর রাস্তার আশপাশে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনায় বিপুলসংখ্যক মশার জন্ম হয়েছে। তাছাড়া বৈশাখের বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতেও মশার ডিম দেখা গেছে।

চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা মাসুদুর রহমান বলেন, “মশা এখন শুধু রাতেই নয়, দিনের বেলায়ও কামড়াচ্ছে। মশা থেকে বাঁচতে অনেকই বাধ্য হয়ে দিনের বেলাও মশারি ব্যবহার করছেন।”

মশা নিধনে পৌরসভার পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ওষুধ ছিটালেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে তিনি মনে করেন।

শহরের প্রতাপ সাহা রোড এলাকার বাসিন্দা রেদওয়ান আহমেদ বলেন, “বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক হারে। কয়েল জ্বালিয়ে বা মশানাশক স্প্রে করেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

“এ অবস্থায় ডেঙ্গুর আশঙ্কাও করছেন অনেকে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে আবার ডেঙ্গু হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে।”

মশা নিধনে অতিদ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছ্নে চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার বাসিন্দা সামীরসহ অনেকে।

সামীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মশার কামড় থেকে বাঁচার কোনো উপায় দেখছি না। মশা নিধনের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে লক্ষণীয় উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এখনই যদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে আমাদের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।”

এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) এএইচএম সুজাউদ্দৌলা রুবেল।

তিনি বলেন, বর্ষার শুরুতেই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তাই মশা নিধনের জন্য এখনই ওষুধ ছিটানো দরকার। পাশাপাশি বাসা-বাড়ির যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে সকলকে। বিশেষ করে ফুলের টব, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বরাতে তিনি বলেন, গত বছর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। এসব রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেয়েছেন চিকিৎসকরা।

“এখন করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আবার ডেঙ্গু দেখা দিলে তার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। এটা সামাল দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

এ বছর এখনও ডেঙ্গু ধরা পড়েনি বলে তিনি জানান।

চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সিদ্দিকুর রহমান ঢালী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কাজ করার পাশাপাশি মশা নিধনের কাজও তারা করছেন। ইতোমধ্যে নালাসহ বিভিন্ন স্থানে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হয়েছে।

“পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে আবারও ছিটানো হবে।”

তিনি পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে পৌরবাসীর উদ্দেশে বলেন, যার যার জায়গা থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

“সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলে মশা নিধন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। অতীতের যেকোনো সংকটময় সময়ের মত ডেঙ্গু মোকাবেলায়ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলে আমি আশা করি।”

SCROLL FOR NEXT