সমগ্র বাংলাদেশ

যুদ্ধাপরাধী আজহারকে মৃত্যুপরোয়ানা শুনিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ

Byগাজীপুর প্রতিনিধি

লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাটি আগের দিন মধ্য রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছার পর মঙ্গলবার সকালে তাকে পড়ে শুনানো হয় বলে কারাগারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবীরা সাক্ষাৎ করে তার সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।

নিয়ম অনুযায়ী, জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহার এখন ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন না করলে যে কোনো দিন রায় কার্যকর হতে পারে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের আবেদন করে সাজা কমানোর নজিরবিহীন। এর আগে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সব যুদ্ধাপরাধী রিভিউ আবেদন করেও সর্বোচ্চ সাজার রায় বদলাতে পারেনি।

রিভিউ আবেদন খারিজ হলেও অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন আজহারুল।তিনি যদি প্রাণভিক্ষা না চান এবং চেয়েও যদি ক্ষমা না পান তাহলে রায় কার্যকরের ক্ষণগণনা শুরু হবে। রায় কার্যকরের আগে তিনি শেষবারের মতো পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।

২০১২ সালের ২২ অগাস্ট মগবাজারের বাসা থেকে এটিএম আজহারকে গ্রেপ্তার করার পরের বছর ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তার বিচার শুরু হয়।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আজহারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। একই সঙ্গে তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের ৩১ অক্টোবর তার সেই সাজা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় রোববার (১৫ মার্চ) প্রকাশিত হয়। রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছানোর পর তার বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপরই মৃত্যুপরোয়ানা কারাগারে পাঠানো হয়।

একাত্তরে জামায়াতের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি আজহারুলের নেতৃত্বেই বৃহত্তর রংপুর এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়িঘরে লুটপাট-অগ্নিসংযোগসহ বর্বরতা চালানো হয়। রায়ে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায় প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা ও নিজেই ১৪ জনকে খুনের অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালের দেওয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে খালাস চেয়ে ২ হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল করেন এই যুদ্ধাপরাধী। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আসামি পক্ষকে সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন।

দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১৮ জুন সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়ে ১০ জুলাই শেষ হয়।

SCROLL FOR NEXT