সমগ্র বাংলাদেশ

আদালতের আদেশের ১০ বছরেও দেয়নি ক্ষতিপূরণ

Byলুৎফর রহমান

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম আজাদকে এ টাকা দেওয়ার আদেশ দেয় জেলার একটি আদালত।

২০০৭ সালে দেওয়া আদালতের এ আদেশ এখনও কার্যকর হয়নি বলে জানান রেজাউল করিম আজাদ।

ঠিকাদারি কাজের ওই ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় এবং দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে আর্থিক অনটনে পড়ে বর্তমানে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এই মুক্তিযোদ্ধা।

মাদারগঞ্জের চর গাবের গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবে তিনি ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী-মাহমুদপুর সড়কের গোপালপুরে একটি আরসিসি পাকা সেতু নির্মাণের (কেয়ার-০৯ প্রকল্প) কার্যাদেশ পান দরপত্রের মাধ্যমে।

“এরপর উপজেলা প্রকৌশলীর নকশা অনুযায়ী ১৯৮৮ সালের ১৩ মার্চ লে-আউট দিয়ে কাজ শুরু করি। কিন্তু প্রকৌশলীর ওই নকশা ভুল ছিল। এ কারণে সেতুটির স্প্যান ২ ফুট ৮ ইঞ্চি কমে যায়; যার কারণে কেয়ার কর্তৃপক্ষ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।”

নকশা ভুল হওয়ার অভিযোগে কাজ বন্ধ করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার বিল প্রদান করেনি বলে আজাদ জানান।

এরপর থেকে ঠিকাদার আজাদ ওই বিলের জন্য ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্না দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।

আজাদ জানান, ২০০৪ সালে জামালপুর দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে তিনি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বিবাদী ছিলেন মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী। মোকাবেলা বিবাদী করা হয় জামালপুরের জেলা প্রশাসককে।

আজাদ বলেন, ২০০৭ সালের মার্চে দেওয়া রায়ে তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৯ টাকা ৪৫ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয় আদালত।

এরপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করে পাঁচ বছর সময় নষ্ট করে।  

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে মামলাটি উচ্চ আদালতে আপীল করার জন্য জামালপুর জেলা জজ আদালতের জিপির মতামত চান।

আজাদ বলেন, ওই বছরই জিপি খাজা নাজিম উদ্দীন এই মামলাটি উচ্চ আদালতে আপিল করার আর কোনো সুযোগ নেই বলে মতামত দেন।

জিপির মতামতের পরও ক্ষতিপূরণের টাকা না তিনি ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে একটি আবেদন করেন বলে জানান আজাদ।

ঠিকাদার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম আজাদ বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আদালতের বারান্দায় ঘুরতে গিয়ে আর্থিক ও মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক সময়ের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতার অর্থে জীবন চালাচ্ছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রাসেল সাবরিন বলেন, “আইনগত কোনো সমস্যা না থাকলে আজাদ যাতে দ্রুত তার ক্ষতিপূরণের টাকা পান সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

SCROLL FOR NEXT