সমগ্র বাংলাদেশ

‘চাচাত ভাইকে ধরে নিয়ে পেটালেন’ শরীয়তপুরের সেই সাবেক চেয়ারম্যান

Byশরীয়তপুর প্রতিনিধি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন লতিফ মল্লিক।

আহত আবদুল লতিফ মল্লিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জাজিরা থানার কুণ্ডেরচর ইউনিয়নের সিডারচর গ্রামের লতিফ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তার দুই হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাত: ডানহাতে কব্জির ওপর দুটি এবং বাঁ হাতে একই জায়গায় সাতটি সেলাই লেগেছে, এছাড়া পিঠ ও দুই পায়ে লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

তার চাচাত ভাই একই গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন মল্লিক কুন্ডেরচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকায় ‘অসামাজিক কার্যকলাপের’ ধোয়া তুলে ‘সামাজিক বিচারে’ এক তরুণ ও এক কিশোরীকে জুতাপেটা ও জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলন তিনি। কয়েক মাস কারাবাসের পর বর্তমানে জামিনে আছেন।

তার নির্দেশে ও উপস্থিতিতে সোমবার ভোরে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন লতিফ মল্লিক। 

এ ঘটনায় লতিফ ছাড়াও আলী আকবর সিকদার, বুলবুল মল্লিক ও কাসেম ছৈয়ালসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা নিয়ে লতিফ ও লিয়াকতের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরে রোববার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে সোমবার ভোরে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষের মধ্যে লতিফকে ধরে নিয়ে পেটানো হয়।

লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংঘর্ষের সময় তিনি গিয়ে পরিস্থিতি ‘শান্ত করার চেষ্টা’ করলে লিয়াকত মল্লিকের সমর্থক নজরুল ইসলাম মল্লিকের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন এসে তাকে মারধর করে স্থানীয় একজনের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে লিয়াকত মল্লিক সেখানে গিয়ে তাকে মারধরের নির্দেশ দেয়। ঘণ্টা দেড়েক তাকে আটকে রেখে মারধর করা হয়।

পরে গ্রামের এক ব্যক্তি এসে তাকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জের বালিগাঁও হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন লতিফ মল্লিক।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন লতিফ মল্লিক।

লতিফ বলেন, “আমাকে মারধর করার সময় ঠেকাতে গেলে আরও ছয়জন আহত হয়।”

তার অভিযোগ, হামলাকারীরা তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তার কয়েকজন সমর্থকের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে লিয়াকত মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। লতিফ ও তার সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন তাদের প্রতিহত করার করে।”

এ ঘটনায় দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে জানিয়ে জাজিরা থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সংঘর্ষের পর দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।”

এর মধ্যে লতিফের সমর্থক মোস্তফা মল্লিকের করা মামলায় প্রতিপক্ষের ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে লিয়াকতের সমর্থক আয়নাল হক মল্লিক যে মামলা করেছেন, তাতে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

SCROLL FOR NEXT