সমগ্র বাংলাদেশ

ভূমি কমিশন আইন: পাহাড়ে চলছে হরতাল

Byবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

হরতালের কারণে রোববার সকাল থেকে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বন্ধ দেখা গেছে দোকানপাট।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধিকে জানান, সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে হরতাল সমর্থকদের পিকেটিং করতে দেখা গেছে। তবে কোথাও বড় ধরনের গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি।

শহরের তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজার, বনরূপা, কলেজ গেইট এলাকার অধিকাংশ দোকান পাট বন্ধ রেখেছেন ব‌্যবসায়ীরা। সড়কপথে যান চলাচলের পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ নৌ- রুটও বন্ধ রয়েছে।

বিশৃঙ্খলা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও টহলে রয়েছেন বলে জানান ওসি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং করে।

পরে হরতালের সমর্থনে মিছিল নিয়ে তারা বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাপলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

সংগঠনের সহ-সভাপতি মাইনুদ্দীন সমাবেশে বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালিদের খেদানোর জন্য সরকার আইন সংশোধনের মাধ্যমে নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। যতদিন এ আইন বাতিল না হবে, ততদিন পাহাড়ে আন্দোলন চলবে।

হরতালে খাগড়াছড়ি জেলাতেও দূরপাল্লার ও অভ্যান্তরীণ রুটের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

গোলযোগ এড়াতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইজ উদ্দীন জানিয়েছেন।

পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতার পরিবর্তন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনের পর গত ৯ অগাস্ট তা অধ‌্যাদেশ আকারে জারি করা হয়।

সংশোধিত এই আইনের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর ভাষ‌্য।

পাঁচ সংগঠন হল পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য গণপরিষদ, সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র ঐক্য পরিষদ।

শনিবার রাঙামাটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে হরতালের ঘোষণা দিয়ে পার্বত্য গণপরিষদ মহাসচিব আলম খান বলেন, “সরকার যে পার্বত্য ভূমি কমিশন সংশোধন আইন জারি করেছে তাতে এ এলাকায় বাঙালিদের ভূমির অধিকার ক্ষুণ্ন হবে।”

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটে। সেই চুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ের ভূমির অধিকার নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে এই কমিশন গঠন করা হয়।

পুরনো আইনে কমিশনের চেয়ারম্যানের হাতে একক সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা থাকায় ওই কমিশন কার্যকর হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), যিনি জনসংহতি সমিতির সভাপতি।

জনসংহতি সমিতিসহ পাহাড়িদের বিভিন্ন সংগঠনের দীর্ঘ আন্দোলনের পরই সরকার চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা কমিয়ে আইন সংশোধনের উদ‌্যোগ নেয়।

SCROLL FOR NEXT