লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণের দোকানে লুট, ‘ডাকাতের গাড়িচাপায়’ পথচারী নিহত

লক্ষ্মীপুর শহরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একটি স্বর্ণের দোকান লুট করেছে একদল হামলাকারী।

শহরের সামাদ মোড় এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ‘আর কে শিল্পালয়ে’ এ লুটের ঘটনা ঘটে।

পালিয়ে যাওয়ার সময় ‘ডাকাতদলের গাড়িচাপায়’ এক পথচারী নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। 

সফি উল্যার (৬০) পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের মৃত মফিজ উল্যার ছেলে। রাস্তা নির্মাণের শ্রমিক ছিলেন তিনি। তার মৃতদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

লুটের সময় বাধা দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা ওই দোকান মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে আহত করে। এ ছাড়া ডাকাত দল পালানোর সময় গাড়ি উল্টে ইসমাইল হোসেন (৫৫) নামে আরও একজন আহত হয়েছেন। ইসমাইলও পশ্চিম লক্ষ্মীপুরের মনু মিয়ার ছেলে।

আহত দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়; পরে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকা থেকে বেশ কিছু হাতবোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডাকাতির ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। 

প্রত্যক্ষদর্শী বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যায় একটি পিক-আপ ভ্যানে করে ৮-১০ জন অস্ত্রধারী এসে এলোপাতাড়ি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাতবোমার ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।

পরে দুর্বৃত্তরা আর কে শিল্পালয়ে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুট করে অল্প সময়ের মধ্যেই পিক-আপ ভ্যানযোগে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় দোকান মালিক অপু কর্মকারকে কুপিয়ে জখম করে যায় দুর্বৃত্তরা।

দুর্বৃত্তরা কী পরিমাণ স্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  

পরে ডাকাতদল পিকআপ-যোগে  দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কের ইটেরপুল এলাকায় তাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এ সময় সেখানে থাকা পথচারী সফি উল্যা নিহত হয়েছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দুইজনক আটক করা হয়েছে। তাদের গাড়ি পালিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে একজন পথচারী মারা গেছে। 

ঘটনাস্থল থেকে জনতা দুইজনকে আটক করেছে; তারা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল বলে জানা গেছে; তাদের সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি জেলা শাখার সভাপতি হরিহর পাল।

তিনি বলেন, আহত আপু কর্মকারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডাকাতের দোকানের সব স্বর্ণ নিয়ে গেছে।

“আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে কর্মসূচি দেব।”