রাজনীতি

আফরোজা আব্বাসের গণসংযোগে হামলার অভিযোগ

Byজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বুধবার বিকালে শাহজাহানপুরে ঢাকা-৮ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তার স্ত্রী আফরোজা।

তার দাবি, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা এবং বেলা সাড়ে ১১টায় মাদারটেক চৌরাস্তার কাছে গণসংযোগের সময় হামলার ওই ঘটনা ঘটে।

হামলার সময় আফরোজার গাড়ি ভাংচুর করা হয় এবং তার চালক গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে দাবি করা হয় সংবকাদ সম্মেলনে।

আফরোজা বলেন, “আমি গণসংযোগ করার জন্য গাড়ি থেকে নেমেছি মাত্র। দূর থেকে আমি দেখলাম, ওরা নৌকার শ্লোগান দিতে দিতে হাত উুঁচ করে এল, ওদের হাতে লাঠি আর হকিস্টিক। আমি সিনোমায় দেখেছিলাম ভাই, কিছু হলে লাঠিয়াল বাহিনী আসে। এই প্রথম বাস্তবে দেখলাম লাঠিয়াল বাহিনী।

“ওদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে মেরে ফেলা একদম। আমাকে হত্যার উদ্দেশে এই আক্রমণ ওরা চালায়। আমি গাড়ি থেকে বের না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলত। আমার গায়ে হাত দিল, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। আমার ড্রাইভারকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে, ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমার গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলেছে, গাড়ির কোনো গ্লাস নেই।”

গণসংযোগে থাকা বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত নেতা-কর্মীসহ পথচারীদের ওপরও সে সময় হামলা হয় বলে অভিযোগ করেনে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা।

তিনি বলেন, “ওরা চাইছে আমারা ফিরে যাই, আমরা প্রচার বন্ধ করি। আমি বলতে চাই, আমি ফিরে যাবে না। একা হলেও এগিয়ে যাব, শেষ পর্যন্ত লড়ব । আমরা কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায় করতে আমরা দেবে না। এখন থেকে যেখানেই বাধা, সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে।”

আফরোজার অভিযোগ, যুব লীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী ওই হামলা চালায়। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা তারা পাননি।

নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সিইসি ও সচিবকে ফোন করে,ছি উনারা রিসিভ করেননি। তারপর কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেবকে জানিয়েছি।”

আফরোজা বলেন, “আমি থানায় ডায়েরি করাতে চাচ্ছি। না নিলে তো আমি আদালতে যাব। কারণ এভাবে চলতে পারে না।”

এ অবস্থায় প্রচার অব্যাহত রাখবেন কিনা- এ প্রশ্নে আফরোজা আব্বাস বলেন, “ অবশ্যই আমরা প্রচার চালাবো। দেখি না ওরা কত আসতে পারে।… আপনারা নিরপেক্ষ থাকলে সব ঠিক বাংলাদেশে, আপনারা নিরপেক্ষ থাকলে তবেই দেশে গণতন্ত্র থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মির্জা আব্বাস বলেন, তিনি শাজাহানপুর এলাকারই সন্তান। এই এলাকায় কেউ তার পরিবারের ওপর হামলা করতে পারে তা তিনি কখনও ভাবেননি। 

“আমি জানি না, কোন  অপশক্তির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে তারা আজকে বিএনপির প্রার্থীর জীবননাশের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আমার সহধর্মিনী কোনো রকমে বেঁচে যান।”

প্রতিপক্ষকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “নির্বাচন একদিন থাকবে না, আমাদের প্রার্থিতাও থাকবে না, আমাদেরকে এলাকায় বসবাস করতে হবে, এটা সকলের মনে রাখা উচিৎ।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার গ্যারেন্টি  তারা পাচ্ছে না। এমনকি ‘স্বাভাবিক মৃত্যু বা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার’ গ্যারেন্টিও নেই।

বাসার চারপাশে ‘সাদা পোশাকে’ পুলিশ ছড়িয়ে আছে এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আব্বাস। 

অন্যদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

SCROLL FOR NEXT