রাজনীতি

দরকার হলেই ইসলামিক, কখনো ধর্মনিরপেক্ষ, কখনো নাস্তিক: রিজভী

Byজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

‘খালেদার ইহুদি ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলায় ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর প্রতি আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় উল্টো ধর্ম নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন তিনি।

ধর্ম নিয়ে ক্ষমতাসীনদের আচরণ ‘সুবিধাবাদী’ দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, “এরা কখনো ইসলামিক হয়ে যাবেন, কখনো ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যাবেন, কখনো নাস্তিক হয়ে যাবেন- নিজেদের সমর্থন আদায়ের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন।”

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর যোগাযোগের অভিযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল-আলম হানিফের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে এই বক্তব্য দেন তিনি।

রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের বক্তব্যে দেশের মানুষ ও আমরা কৌতূক বোধ করছি। যারা সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম মুছে দিয়েছে। এখন তারা আসলাম চৌধুরীর একটি কল্পকাহিনী- রূপকথা সাজিয়ে খুব প্রচার দিয়ে বেড়াচ্ছেন। মনে করছেন মানুষ বুঝি- কিছুই বোঝে না।

“জনগণ জানে এরা নাটক সৃষ্টি করার জন্য, জনগণের সহানুভূতি আদায়ের জন্য এসব কথা-বার্তা বলছে।”

বিএনপি এখন ইসরায়েল ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে ‘হাত মিলিয়েছে’ বলে গত রোববার এক দলীয় সভায় দাবি করেন হানিফ। এর প্রতিবাদে ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে মাঠে নামার আহ্বান জানান তিনি।

“ইহুদি-নাসারারা ইসলামের শত্রু। তারা যখন ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর আক্রমণ করেছিল, তখন এই বাংলাদেশের সমস্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলো আন্দোলনে নেমেছিল। আজ আপনারা কোথায়? আপনারা আজ কেন চুপ করে বসে আছেন?,” বলেছিলেন তিনি।

তার ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ‘ধার্মিকদের জঙ্গি হিসেবে চিত্রিত’ করার অভিযোগ করেন রিজভী।

“যারা ধার্মিক মানুষ তাদেরকে বার বার চিত্রিত করেছেন জঙ্গি হিসেবে। ইসলামিককেই প্রতিপক্ষ করেছেন তারা। সেই ধর্মের ওপর তারা বার বার কটূক্তি করেছেন এবং তাদের সমর্থিত বিভিন্ন মানুষ তথা বুদ্ধিজীবীরা এসব কথা বলেছেন,” বলেন এই বিএনপি নেতা।

আওয়ামী লীগের কোনো আদর্শ ও নীতিবোধ নেই দাবি করে তিনি বলেন, “এরা ক্ষমতায় থাকার জন্য যখন যাকে ইচ্ছা তাকে ব্যবহার করবে।”  

‘কণ্ঠরোধে এনজিও আইন সংশোধন’

এনজিওর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিধান রেখে বৈদেশিক স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম রেগুলেশন বিল প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের ‘দুঃশাসনের’ বিরুদ্ধে কেউ যেন নীচু গলায়ও কোনো আওয়াজ তুলতে না পারে সেজন্য এটা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগকে ‘দূরভিসন্ধিমূলক’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকারের বেপরোয়া দুর্নীতি, অনাচার ও স্বেচ্ছাচারিতাকে নিরাপদ করা হবে, যাতে কোনো বেসরকারি সংগঠন, ওয়াচ ডগ, মানবাধিকার গ্রুপ সরকারের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি লুটপাটের মাধ্যমে সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস, বিরোধী দল দমনে নিষ্ঠুর পদ্ধতির প্রয়োগ ইত্যাদির বিরুদ্ধে তাদের সমালোচনাকে বন্ধ করে দেওয়া যায়।”

চলমান ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা নিয়মিত সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার এই কমিশনকে ‘রাষ্ট্রীয় পদক’ এ ভূষিত করতে পারে।

নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হক নান্না, আবদুল আউয়াল খান, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

SCROLL FOR NEXT