বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

)<div class="paragraphs"><p>বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।</p></div>
রাজনীতি

‘বিশিষ্ট ভদ্রলোক’ সিইসিকে বিএনপির ধন্যবাদ, আলোচনার আহ্বানে ‘না’

Byজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

আলোচনার জন্য আহ্বান জানানোয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। তাকে ‘বিশিষ্ট ভদ্রলোক’ বলে প্রশংসাও করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তবে বিএনপি মনে করে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষমতা কমিশনের ‘নেই’। তাই সংলাপে বসা ‘অর্থহীন’।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে কমিশনের পক্ষ থেকে আসা সংলাপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করার কথা জানান ফখরুল।

বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের নীতি নির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না এবং তা হবে অর্থহীন।

“২০১৪ সাল এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রমাণিত হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় এবং ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই।”

এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়া নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসলেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো কমিশনের ডাকে যায়নি। তারপরেও সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে আবার আলোচনার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল মঙ্গলবার সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, সংলাপ নয়, অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্যে বিএনপিকে তারা চিঠি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “পত্র প্রেরণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়।”

তবে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, কোনো আলোচনাতেই আগ্রহ না থাকার কথাও জানিয়ে দিয়েছে দলটি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, যেহেতু মূল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোনো সম্ভাবনা নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময় সম্ভব নয়। সেই কারণে বিএনপি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে না।”

সিইসি ‘বিশিষ্ট ভদ্রলোক মানুষ’

সিইসির প্রশংসা করে ফখরুল বলেন, ‘‘আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার যিনি হয়েছেন, তিনি কিন্তু ভদ্রলোক মানুষ, বিশিষ্ট ভদ্রলোক। চিঠির ভাষাও তার অত্যন্ত মার্জিত ভাষা এবং তার যে আবেদনটা, তার যে অ্যাপ্রোচ, দ্যাট ইজ অলসো ভেরি গুড অ্যাপ্রোচ। বাট উই নো দা রিয়েলিটি।”

সিইসির এই আলোচনার উদ্যোগ নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “আমরা যখন বলেছি কূটকৌশল। উনি গতকাল আপনাদের কাছে উত্তর দিয়ে বলেছেন, উনি এটা করছেন না, আন্তরিকভাবে করছেন। এটা বিশ্বাস করা আমাদের জন্য খুব কঠিন।”

সিইসির চিঠির জবাব দেওয়া হবে না

বিএনপি যে নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে না, সেই সিদ্ধান্ত চিঠি দিয়ে জানানোর প্রয়োজন বোধ করছে না দলটি।

ফখরুল বলেন, ‘‘আমি এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমেই উনাকে (সিইসি) জানাচ্ছি। এজন্য এই প্রেস কনফারেন্স করা। আমি আশা করি আমাদের মতামতটা গ্রহণ করবেন।

“আমরা এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের উত্তর জাতিকে জনগণকে জানিয়ে দিয়েছি। এটা নতুন করে আর কিছু নাই।”

আলোচনা করলে সরকারকে করতে হবে

এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, আলোচনা করতে হলে সরকারকে করতে হবে।

“সংবিধান পরিবর্তন করেই ওই জায়গায় (নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার) যেতে হবে। সুতরাং ওটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে, সরকারকেই আসতে হবে। আমাদের কথা খুব স্পষ্ট যে, এই বিষয় ছাড়া আর কোনো বিষয়ে আলোচনার আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।”

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বসে বিএনপির এই দাবির কিছুই আদায় হবে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন,  “যার (সিইসি) কোনো ক্ষমতাই নেই আমার দেশের এই সমস্যা সমাধান করার, তার কাছে এই সুযোগ (সংলাপ) কী জন্য নেব? উনি তো মেইলবক্স নন যে, উনার কাছে পাঠিয়ে দিলাম, উনি পাঠিয়ে দিলেন সরকারের কাছে।

“এটা পুরোপুরি সরকারের ব্যাপার। যেহেতেু সংসদে সরকারের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তারা এটা (নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার) পারে। অন্য কেউ এটা পারবে না।”

SCROLL FOR NEXT