লাইফস্টাইল

হৃদযন্ত্রের স্বার্থে গান শোনা

Byআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বুক ব্যথায় ভোগা রোগীকে গান শোনানোর কারণে তার ব্যথা এবং মানসিক অস্বস্তি দুটোই উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমতে দেখেছেন সার্বিয়ার ‘ইউনিভার্সিটি অফ বেলগ্রেড’য়ের গবেষকরা।

‘হার্ট অ্যাটাক’য়ের পর বুকে ব্যথা হওয়াকে চিকিৎসকদের ভাষায় বলা হয় ‘আর্লি পোস্ট-ইনফার্কশন অ্যানজিনা’।

তবে শুধু গান নয় সঙ্গে প্রয়োজন নির্দিষ্ট কিছু ‘থেরাপি’ যেমন- ধ্যান। ঘরেই করা যায় এমন ধ্যান ও গানের মিশ্রণ হৃদরোগের সঙ্গে আসা সমস্যাগুলো কমানোর পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে হৃদযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমাবে, দাবি গবেষকদের।

গবেষণার প্রধান, সার্বিয়ার ‘ইউনিভার্সিটি অফ বেলগ্রেড’য়ের অধ্যাপক প্রেদার্গ মিত্রোভিচ বলেন, “আমাদের গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, শুধু ‘আর্লি পোস্ট-ইনফার্কশন অ্যানজিনা’তে আক্রান্ত হওয়া মানুষ নয় বরং ‘হার্ট অ্যাটাক’য়ের শিকার হওয়া প্রতিটি মানুষকেই সাহায্য করতে পারে গান বা সংগীত।”

এই গবেষণার জন্য ৩৫০ জন ‘হার্ট অ্যাটাক’ ও ‘আর্লি পোস্ট-ইনফার্কশন অ্যানজিনা’ রোগীকে নিয়ে সার্বিয়ার এক ‘মেডিকাল সেন্টার’য়ে কাজ করেন গবেষকরা। এলোমেলোভাবে বেছে নিয়ে দুদলে ভাগ করা হয় অংশগ্রহণকারীদের। একদলকে দেওয়া হয় সাধারণ চিকিৎসা আর অন্যদলকে সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি দেওয়া হয় নিয়মিত ‘মিউজিক থেরাপি’।

তবে যাদেরকে এই ‘মিউজিক থেরাপি’ দেওয়া হয় তাদের শরীর কোন ধরনের সুরের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেবে সেই পরীক্ষা করা হয়।

এই রোগীদের মোট নয় ধরনের সুর শোনানো হয় যা ওই রোগীদের জন্য ছিল শ্রুতিমধুর এবং প্রতিটি ছিল আধা মিনিট দীর্ঘ। আর এসময় গবেষকরা তাদের চোখের ‘পিউপিল’য়ের সংকোচন-প্রসারণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের অনৈচ্ছিক নড়াচড়াগুলো পর্যালোচনা করেন।

দীর্ঘ সাত বছর ধরে তাদের এই ‘মিউজিক থেরাপি’ দেওয়া হয়। প্রতি ‘সেশন’য়ের তথ্যও রাখা হয়।

গবেষকদের দাবি, সাত বছর এই ‘মিউজিক থেরাপি’ রোগীর ব্যথা ও অন্যান্য সমস্যা কমাতে যতটুকু উপকার করেছে তা শুধু সাধারণ চিকিৎসায় একজন রোগী যতটুকু উপকার পায় তার থেকেও বেশি।

পাশাপাশি ‘হার্ট ফেইলিউর’য়ের ঝুঁকি কমেছে ১৮ শতাংশ, ভবিষ্যতে আবার ‘হার্ট অ্যাটাক’ হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ২৩ শতাংশ, ‘করোনারি আর্টারি বাইপাস গ্রাফ্ট সার্জারি’ করানোর প্রয়োজনীয়তা কমেছে ২০ শতাংশ এবং হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমেছে ১৬ শতাংশ।

গবেষকরা মনে করেন, “সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম’য়ের কার্যাবলী নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার মাধ্যমে গান এই উপকার করে। মানুষ যখন মানসিক চাপে থাকে তখন তার ‘ফাইট-অর-ফ্লাইট’ অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে এই ‘সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম’। আর যেহেতু এই স্নায়ুতন্ত্র হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, তাই এতে হৃদযন্ত্রের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন

SCROLL FOR NEXT